গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গত ১৭/১০/২৩ তারিখে রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের নিয়োগ বোর্ডে প্রভাষক পদে যোগসাজশে নিয়োগের ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে। বোর্ড এক্সপার্টদের সঠিক সময়ে অবগত না করা ও রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের চাপে এক এক্সপার্টকে ভাইবা বোর্ড শুরু হওয়ার পরে লিংক দেওয়া হয়েছে তবে শিক্ষকদের চাপে জুম লিংক দেওয়া হয়েছে কিনা এ বিষয়ে সঠিক মনে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ রেজিস্ট্রার মুরাদ হোসেনের।

শিক্ষকদের চাপের বিষয় টি অস্বীকার করে মুরাদ হোসেন বলেন, “আসলে এ বিষয়ে আমার সঠিক মনে পড়ছে না”

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ তম রিজেন্ট বোর্ডের সকল নিয়োগ ও আপগ্রেডেশন স্থগিতের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও বানিজ্যের অভিযোগে রিজেন্ট বোর্ড কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানা গেছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের এক্সপার্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহরাব বলেন,আসলে আমাকে কোন চিঠি পত্র দেওয়া হয় নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী একটা স্টেটমেন্ট দিতে হয় যেখানে কতজন ক্যান্ডিডেড, তাদের রেজাল্ট, একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন সহ একটা সামারি দেওয়া হয় সিলেকশন এর আগেই, এক্সপার্টদের বাসায় হার্ড কপি পাঠানো হয় প্রয়োজনে সফট কপি সরবরাহ করা হয়।আমাকে এগুলোর কোন কিছুই দেয় নাই।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার আগের দিন মানবিক অনুষদের ডিন ও রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসিবুর রহমান আমাকে ফোন করলো। আমি বললাম এত অল্প সময়ে করবেন আমি তো কোন কাগজ পত্র পাইনি। কালকে ইন্টারভিউ আজকে জানাচ্ছেন আর একদিনের নোটিশে এটা কেমন কথা! এক সপ্তাহ আগে বলতেন? প্রার্থীরা জানে অথচ আমরা(নিয়োগ বোর্ডের এক্সপার্ট) জানিনা এটা কেমন কথা। এটা তো একটা উদ্ভট ব্যাপার। পরবর্তীতে আমি তাকে অস্বীকৃতি জানাই। কিছুক্ষণ পরে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুরাদ আমাকে ফোন দিয়ে বলে স্যার আপনাকে সব মেইল করা হয়েছে অথচ আমি মেইলে ভাইবা বোর্ডের লিংক ছাড়া নিয়োগ সংক্রান্ত কোন ডকুমেন্টস কিছুই পাইনি!

সে লিংক দেওয়ার পর জয়েন দিয়ে দেখি তারা ৯-১০ জনের ভাইবা নিয়ে নিয়েছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রক্রিয়া টা উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে তাড়াহুড়ো করে হয়েছে। আমি ড.হাসিবুর রহমান কে বলেছিলাম যে এক সপ্তাহ পিছিয়ে বোর্ড করেন আমরা সবাই আসি না হলে এত দ্রুত কীভাবে কি! বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের অযুহাত ও সে বিভাগের দায় দায়িত্ব আছে খুব দ্রুত করতে হবে বলে জানান।

যেভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছে এবং আহমেদ আলী শাওকি কে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তার থেকে যোগ্য প্রার্থী ছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলাম কারণ তার থেকে যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। পিএইচডি ক্যান্ডিডেড, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সহ কয়েকজন তার থেকে অধিক যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। আমি সংখ্যালগিষ্ঠ হওয়ায় আমার কথা গ্রহণযোগ্য হয়নি। কারণ ড.হাসিবুর রহমান পদাধিকার বলে চেয়ারম্যান ও ডিন এবং জাবির দুইজন অধ্যাপক বশির আহমেদ ও ড শামসুন্নাহার খানম ছিলেন তারা চারজন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের হওয়ায় জোটবদ্ধ হয় পরবর্তীতে উপাচার্য বলে তারা তো একদিকে আপনি শুধু একা অন্যদিকে এর মধ্যে হঠাৎ করে একটা কারিগরি প্রক্রিয়া বন্ধ করে উনারা কিভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে বলে তারা তো চারজন এক হয়ে গেছে আপনি কি করবেন। জাবির দুই এক্সপার্ট হাসিবের সরাসরি শিক্ষক ও তারা তিনজন এক হওয়াতে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ারের অধ্যাপক খুরশিদা ম্যাডাম অনুপস্থিত থাকায় আমার কিছু করার ছিলো না।

এদিকে নিয়োগ বোর্ডে ভাইবা দেওয়া পিএইচডি ডিগ্রি ধারী প্রার্থী যিনি ছিলেন তিনি ভাইবা ভালো দেওয়ার পর সামাজিক অনুষদের ডিন ও রাস্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড হাসিবুর রহমান এক প্রকার জোরপূর্বক বলেন, “আপনি ঢাকায় ভালো আছেন। এখানে আইসেন না এখানে ক্লাসের লোড বেশি”।

নিয়োগ বানিজ্য ও অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে ড হাসিবুর রহমান বলেন,বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, একটা মিথ্যা আইডি দিয়ে এই প্রপাগাণ্ডা ছড়ানো হয়েছে। আর বোর্ডের আমি একজন জুনিয়র মেম্বার। বোর্ড এক্সপার্টরা যাকে যোগ্য মনে করেছেন তাকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড একিউএম মাহবুব এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

বার্তা বাজার/জে আই