টাঙ্গাইলে ঘাটাইল উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস পালিত।রবিবার ১০(ডিসেম্বর)দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে জাতীয় পতাকা উত্তোলন,একটি শোভা যাত্রা পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড আয়োজিত সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার তোফাজ্জল হোসেন এর সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী হিরার
সঞ্চালনায়, উপজেলা অডিটোরিয়ামে শোভা যাত্রা ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি,পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক কামরুল হাসান খান,উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল
ইসলাম লেবু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরতিজা হাসান,জিবিজি সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলম মনি,বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের উপজেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এমদাদাদুল হক খান হুমায়ন ঘাটাইল থানা অফিসার্স ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বিআরডিবির চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমীন প্রমুখ।

উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদারের কবল থেকে মুক্ত হয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল।দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে এ উপজেলায় কাদেরিয়া
বাহিনী বিশেষ অবদান রাখে এই এলাকা শত্রুমুক্ত করতে। এই বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা যমুনা নদীতে পাকিস্থানি যুদ্ধ জাহাজ ধবংস করেন। তাঁরা পাকিস্তানি বাহিনীর গোলা বারুদ ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কব্জা করে মুক্তিযুদ্ধের নতুন দিগন্তের সূচনা করেন।

কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হবার পর ঘাটাইলের সব মুক্তিযোদ্ধা এ বাহিনীর সঙ্গে একীভূত হয়ে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মাকড়াই যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর হাতে গুলি লাগলে তিনি মারাত্মক আহত হন। ৭ ডিসেম্বর ভূঞাপুর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় ৮ ডিসেম্বর রাত্রেই ঘাটাইলের প্রত্যেক পাকবাহিনীর অবস্থানে একযোগে আক্রমণ করা হবে খোদ কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে।

এই মর্মে প্রত্যেক কম্পানি ও কম্পানি কমান্ডারদের আক্রমণস্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই লক্ষ্যে ৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ৩০টি কম্পানিতে বিভক্ত করে পাঁচটি মূল দলে ভাগ করে আক্রমণের স্থান নির্ধারণ করা হয়।

৮ ডিসেম্বর রাত ১১টায় আরো একটি কম্পানি রতনপুর অবস্থান নেয়। গোলাপের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে বানিয়াপাড়া সেতুর
পশ্চিম পাশে তেলেঙ্গাপাড়া গ্রামে অবস্থান নেয় কম্পানিটি। ৯ ডিসেম্বর কাদের সিদ্দিকীর নির্দেশ অনুযায়ী কালিদাসপাড়া, গুণগ্রাম, ঘাটাইল সদর ও বানিয়া পাড়া সেতু একযোগে আক্রমণ করা হবে। সে পকিল্পনা মোতাবেক ভোর ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চতুর্দিক থেকে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘাটাইল থানা আক্রমণ করে মুক্তি বাহিনী। পরে মেজর হাবিব ভোরে বানিয়াপাড়া সেতু, মেজর মোস্তফা কালিদাসপাড়া সেতু দখল করে ঘাটাইল থানার দিকে অগ্রসর হন। কাদের সিদ্দিকী নিজেই পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করেন। এ যুদ্ধে ৫০ জন পাকহানাদার নিহত ও ১৫০ জন বন্দি হয়।

বার্তা বাজার/জে আই