গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) নতুন প্রো ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে গত ১৫ অক্টোবর নিয়োগ পেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলম। তার নিয়োগের পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারীদের আন্দোলনের নামে তালা মারার যে সংস্কৃতি বন্ধ করা এবং সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ তৈরি করা সহ বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢেলে সাজাতে গবেষণা ও পাঠদানের পরিবেশ তৈরী করা, স্থানীয় জনসাধারণের কল্যাণ নিশ্চিত, মেধার বিকাশ ঘটানো ও মেধাবী তৈরিতে বিশেষ নজর দেওয়া, বিভিন্ন অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে অবকাঠামোগত, গবেষণাধর্মী ও দীর্ঘস্থায়ী টেকসই কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে দৈনিক বার্তা বাজারের সাথে কথা বলেছেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলম। তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বার্তা বাজারের প্রতিবেদক সাগর দে।

বার্তা বাজার: প্রো ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদানের পর কোন বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানে চির নিদ্রায় শায়িত আছেন। এটা আমাকে বেশি আকর্ষণ করে। উনার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রো ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বঙ্গবন্ধুর পাশে থাকার সুযোগ পেয়েছি, যে দেশটা ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত, জাতীয় চার নেতা সহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। সত্যি বলতে এক টুকরো স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য জাতির পিতার যে আত্মত্যাগ এজন্য আমরা বাঙালি জাতি তার কাছে ঋনী । বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় সেটির জন্য কাজ করবো। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছি আসার পর যে জিনিস টা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি সেটা হলো যে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ালিটি সম্পন্ন শিক্ষার মানোন্নয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়ম কানন মেনে চলবে, সামগ্রিক দিক দিয়ে বশেমুরবিপ্রবি পৃথিবীর বুকে শিক্ষা ও গবেষণায় ভালো একটা স্থান পায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আসার পর অনেক কিছু দেখেছি যেটা ল অ্যান্ড অর্ডার, নিয়মানুবর্তিতা যেগুলো আমার চোখে পড়েছে সেটা আমার ভালো লাগেনি।

বার্তা বাজার: আপনার নিয়োগের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পরিবর্তন লক্ষনীয় যেমন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও ল্যাবগুলোর বেহাল দশা থেকে মুক্তি বিশেষ করে ওয়াশরুম গুলোর বিষয়ে যদি কিছু বলতেন…

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর :সবচেয়ে বড় সত্যি যদি পরিবেশ না থাকে সেখানে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব না। আমি নিজে ছাত্র ছাত্রীদের কথা শুনেছি। ওয়াশরুমের জন্য বেশি ভোগান্তির শিকার মেয়েরা। ক্লাস টাইমে সবার ই আবাসিক হল গুলোর ওয়াশরুম ব্যবহার করতে হয় যেটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সরেজমিনে নিজে পরিদর্শন করে দেখেছি, এত খারাপ অবস্থা ছিলো যে কোন ভাবেই ব্যবহারের যোগ্য নয়। আমি চেষ্টা করেছি এগুলো ব্যবহার এর উপযুক্ত করা এবং আমার সময়ে এটি চলমান থাকবে বলে আমি আশাবাদী।

বার্তা বাজার: স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে আপনার অভিমত জানতে চাই..

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : আমার কাছে যেটি মনে হচ্ছে এখানে ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক খুব একটা ভালো বলে মনে হয়না। শিক্ষক রাজনীতিতে একেক জন একেক মতাদর্শের হতে পারে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এগুলো থাকবে না এটি কোন ভাবেই কাম্য নয়। একজন ছাত্রের সাথে আমার আইডলজি নাই মিলতে পারে তাই বলে তার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক থাকবে না? কারণ একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে সবাই আমাদের ছাত্র। শিক্ষার্থীদের সাথে আমার সম্পর্ক একাডেমিক। উপরওয়ালা আছেন তিনি সব দেখেন খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষার্থীদের সাথে যেন কোনভাবে অবিচার না করা হয়।

বার্তা বাজার: বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন ধরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলমান পাশাপাশি যৌন হয়রানি, মার্ক টেম্পারিং কম্পিউটার চুরি সহ বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের অনেক জিনিস চুরি হয়েছে,এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও আলোর মুখ দেখেনি এই বিষয়ে আপনার ভূমিকা কি থাকবে?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : আমার কাছে যেটি মনে হয় এখানে প্রশাসননিক দক্ষতার অনেক অভাব। এক্ষেত্রে আমার ভূমিকা থাকবে সকল তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসতে হবে কেন আসবে না? আমি ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রার মহোদয় কে বলে দিয়েছি, কয়েকটি তদন্ত কমিটির সদস্যদের ডেকে ইতিমধ্যে বলেছি আর সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপাচার্য তার পরেও আমি আমার তরফ থেকে রেজিস্ট্রার কে বলেছি এখন পর্যন্ত সর্বমোট কতগুলো তদন্ত কমিটি হয়েছে সেগুলো বের করতে।আমি নিজে দেখেছি দুই তিন বছরের আগের তদন্ত রিপোর্ট এখনো আসেনি।

বার্তা বাজার: ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে আপনার ভাবনা জানতে চাই?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : সবচেয়ে বড় কথা শিক্ষার্থীদের যে বয়স এ সময় স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে অনেক কিছু করে কারণ এই বয়স টা আবেগের।সেখানে শিক্ষার্থীদের আমি দোষ দেখিনা তারা আমাদের ছেলে মেয়ে। কারণ ছাত্রের বাবা যখন আমার কাছে দিয়ে যায় আমি তখন তার অভিভাবক।

অভিভাবক হিসেবে আমার দায়িত্ব ছাত্রদের সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ দিয়ে একজন ভালো গ্রাজুয়েট তৈরি করা যাতে সে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে। সেখানে আমরা ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে। আইনে আছে ১২ সেমিস্টার পর্যন্ত একজন থাকতে পারে। এখানেও আইনের সঠিক প্রয়োগ হয়না বলে মনে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে আইনের শাসন সঠিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত না হলে কোন কিছুর পরিবর্তন সম্ভব না।
একইসাথে সকল বিভাগের পরীক্ষা রেজাল্ট যেন একই সময়ে হয় সে ব্যাপারে কাজ করতে পারবো বলে আশাবাদী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব টা গুরুত্বপূর্ণ এখানে সঠিক নেতৃত্বর অভাব রয়েছে বলে মনে করি।আমাদের নৈতিক দায়িত্ব একজন শিক্ষার্থীকে সঠিক নির্দেশনা দিয়ে প্রোপার ওয়ে তে বের করা যেন সে দেশ ও দশের কল্যানে কিছু করতে পারে।

বার্তা বাজার: শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী কর্ম পরিবেশ নিয়ে সচেতন মহলে বেশ কথা হয়…সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ নিয়ে যদি বলতেন?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এর যে জায়গা সেটা এখানে নাই। আমার যেটা মনে হয়েছে আইন কানুন প্রশাসনিক ভাবে এক কথায় যেটা বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ এখানে খুব অভাব দেখেছি ।এই জিনিসটা আসলে আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান এর সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ না থাকলে সে প্রতিষ্ঠান কখনোই আগানো সম্ভব না বলে মনে করি।

বার্তা বাজার: বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে একের পর এক নিউজ হলেও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে এ বিষয় নিয়ে আপনার অভিমত…

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : শুরুতেই বলেছি কোন তদন্ত রিপোর্ট আসেনি তার মানে কি? ইনডিরেক্টলি অপরাধীকে সাপোর্ট দেওয়া।এগুলো তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা মাননীয় উপাচার্যের দায়িত্ব। সে নির্দোষ ও হতে পারে হলে সে ছাড়া পাবে। কিন্তু রিপোর্ট আসা জরুরি। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত থাকে তারা প্রমোশন পেয়ে যায় এটা অহরহ চলছে। ভবিষ্যতে এমন হবে না বলে আশাবাদী।

বার্তা বাজার: উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ হচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে বশেমুরবিপ্রবি নিয়ে আপনার ভাবনা?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : এখানে শিক্ষক স্বল্পতা ও গবেষণা নিয়ে চিন্তা ভাবনা সেখানে এটি কম ই বলে মনে হয়। তারথেকেও বড় কথা গবেষণায় বরাদ্দ কম। এখন আপনি যদি গবেষনার জন্য বরাদ্দ না চান তাহলে তো আগাবে না। আর আমি আসার পর ইতিমধ্যে নিয়ম করেছি ২ বছর কমপক্ষে চাকরি করার পর শিক্ষা ছুটি পাবে এর আগে নয়। আশা করি শিক্ষক সংকটের সমাধানের এটাও একটা ওয়ে পাশাপাশি গবেষণা খাতে বরাদ্দ বেশি হলে শিক্ষকরা গবেষণায় আগ্রহী হবে বলে আমি একজন শিক্ষক হিসেবে আশাবাদী।

বার্তা বাজার : ক্লাসরুম ও আবাসন সংকটসহ ভৌত অবকাঠামো সংকট মোকাবিলায় আপনার উদ্যোগ বা পরিকল্পনা কী?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : আমি দেখছি ইতিমধ্যে অনেক বিষয়ে অবগত আশা করি এগুলো নিয়ে কাজ করতে পারবো। বিশেষ করে ল্যাব ও ক্লাসরুম সংকটের জন্য অনেক পিছিয়ে এটা নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আশা করি ছাত্র ছাত্রীরা ল্যাবের সুবিধা পাবে এখন থেকে এবং এটাকে কিভাবে আরও ডেভেলপমেন্ট করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি।

বার্তা বাজার: দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ লেগেই আছে। একই সাথেএই বিশ্ববিদ্যালয়েও এই অভিযোগ দীর্ঘদিনে। অনেক সময় দেখতে পাই অপরাধ করেও একজন শিক্ষক আপগ্রেডেশন পায় আবার অনেক শিক্ষকের যোগ্যতা থাকা সত্বেও তিনি আপগ্রেডেশন পায় না। এসকল নিয়োগের ক্ষেত্রে আপনার দর্শন কী?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : আপনি যে প্রশ্ন করলেন আমি তার সাথে একমত এবং সত্যি বলতে তো কোন সমস্যা নাই আপগ্রেডেশন নিয়ে যেটি বললেন সেটি আমি আসার পরেও দেখেছি এবং আমি আপনার সাথে সহমত। আমি ইতিমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি নিজেও দেখেছি কারও কারও ক্ষেত্রে তিন দিনেও বোর্ড বসে আবার কারও ক্ষেত্রে মাস পেরিয়ে গেলেও বোর্ড বসে না। এই জিনিস গুলো কেন থাকবে? মনে রাখতে হবে আমি প্রশাসক আমি সবার কাছে সমান। দল মত ভিন্ন থাকলেও প্রশাসক হিসেবে সবাই কে আমার সমান চোখে দেখা দায়িত্ব বলে মনে করি।মাথায় রাখা জরুরি কেউ যেন আমার জন্য বঞ্চিত না হয়। না পারলে আমি সেটার জন্য প্রয়োজনে সরি বলবো!তারা আসবে আমি তাদের সাথে কথা বলবো যে তোমার এই কারণে হচ্ছে না।এটা একমাত্র সম্ভব যদি আমি নিজে ঠিক থাকি।

বার্তা বাজার: বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যাপারে শোনা যায় ড্রেস পরিধান করলে এলার্জির মতো সমস্যার সৃষ্টি হয় পাশাপাশি তারা ড্রেসকোড ছাড়া ডিউটি ও তাদের অবহেলায় বিকাল হলেই বহিরাগতের একটা চাপ লক্ষ্যনীয় এর ফলে মেয়েরা স্লেজিং এর শিকার হয় বেশি এসব নিয়ে যদি কিছু বলতেন?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর: পোশাক পরিধান করলে এলার্জি কেন হবে? এগুলো নিয়ে কাজ করবো অবশ্যই ড্রেস পরিধান করে ডিউটি করতে হবে এবং সিকিউরিটি ব্যবস্থা কিভাবে উন্নত করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করবো। মেয়েদের ব্যাপারে সাধারণ দেখি তারা রাত ১২-১ টার দিকেও ক্যাম্পাসে থাকে এ ব্যাপারে আমার অভিমত থাকবে লাইব্রেরি যতসময় খোলা থাকবে এবং শহরের লাস্ট বাসের সিডিউল পর্যন্ত মেয়েদের হলের গেট খোলা থাকবে।এবং কোন বিভাগের প্রোগ্রাম হলে তারা বিভাগের মাধ্যমে হল প্রশাসন কে অবগত করে বাইরে থাকতে পারবে।

বার্তা বাজার: বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি উপাচার্য তৃতীয় ফেজের কাজ এখানো শেষ করতে পারিনি এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রকল্প বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প ও নতুন করে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে আপনার ভাবনা?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : এ ব্যাপারে আমি খুব বেশি অবগত না তবে একটা জিনিস বলতে পারি নতুন করে জমি অধিগ্রহণ এর ব্যাপারে বারবার বলেছি তার জন্য ৯টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত অফিস করা জরুরি যেটা এখানে নাই তাহলে আগাবো কিভাবে? আমার নিয়োগপত্রে লেখা আছে আমি আবাসিক এখন আমি যদি এখানে না থাকি তাহলে কিভাবে আগানো সম্ভব? আমি নিয়মিত না হলে আমার কর্মকর্তা কর্মচারী রা নিয়মিত হবেন না এটাই স্বাভাবিক। ক্যাম্পাসে আমি ঠিক মতো না থাকলে আমি ক্যাম্পাস নিয়ে ফিল করবো কিভাবে যে ছাত্র ছাত্রীদের চাহিদা কি? এখানে ৫৫ একর জায়গা এখানে আরও মিনিমাম ৫৫ একর জায়গা দরকার। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় টা জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত।তার নামে বিশ্ববিদ্যালয় বড় হবে না?সেটি কিভাবে সম্ভব? এ ব্যাপারে আমি কাজ করছি কয়েকবার রিজেন্ট বোর্ডে বলেছি আশা করি ভালো কিছু হবে।

বার্তা বাজার: বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট সংকট নিরসনের কি ভূমিকা রাখবেন?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : শুরুতেই বলি এখানে বেশি ছাত্র ভর্তি হওয়ায় এই অসুবিধা টা তৈরি হয়েছে।যেহেতু ছাত্র ছাত্রী বেশি ভর্তি হয় তার একটা বড় অংশ বিশ্ববিদ্যালয় পায় এজন্য মনে করি এখানে বাজেট সংকট তৈরি হয়েছে। যেহেতু এখন ছাত্র ছাত্রীর ভর্তির পরিমাণ কমে গেছে পাশাপাশি গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি সহ বাজেটের পরিমান যেন বাড়ে তার জন্য আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

বার্তা বাজার: শিক্ষকসহ জনবল সংকটের বিষয়টি একাধিকবার গণমাধ্যমে ওঠে এসেছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর : হ্যা আমি নিজেও এসে দেখেছি কোন কোন বিভাগে ২-৩ জন শিক্ষক দিয়ে একটা বিভাগ চলে এটা কাম্য নয়। ছাত্র শিক্ষক রেশিও যেন ঠিক থাকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবো বলে আশাবাদী। আমি আসার পর সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছি শিক্ষক নিয়োগ সহ যেকোনো বিষয়ে যে তালা মারার সংস্কৃতি এটি আমি আসার পর সেটি বন্ধ হয়েছে আশা করি আর হবে না।সবচেয়ে বড় ব্যাপার আলোচনা করলে অর্ধেক সমাধান হয় বলে মনে করি। কোন কিছু হলে আলোচনা করা জরুরি এবং উভয়য়ের কথা শোনা জরুরি তাহলে এমন পরিস্থিতি কখনোই তৈরি হতো না।

বার্তা বাজার: স্যার শেষ প্রশ্ন, বশেমুরবিপ্রবি নিয়ে আপনার স্বপ্ন কী? আগামীদিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেমন দেখতে চান? কীভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব?

প্রো ভাইস চ্যান্সেলর: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় যেন বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা ভূমিকা রাখতে পারে তেমন প্রডাক্টিভ ছেলে মেয়ে যেন এখান থেকে আমরা বের করতে পারি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় যেন সবাই মাথা উঁচু করে দিতে পারে তার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাবো ইনশাআল্লাহ। তার জন্য বর্তমান সময়ে আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সিস্টেমের পরিবর্তন ও কর্মপরিবেশ তৈরি করা।

বার্তাবাজার/এম আই