ঝালকাঠিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নিয়ে আনন্দ মিছিলে জেলা যুবলীগের এক পক্ষের ওপর আরেক পক্ষের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে শহরের পোস্ট অফিস সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলনসহ চারজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিমে) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার।

একপক্ষের আহতরা হলেন, পৌরসভার ডাক্তারপট্টি এলাকার দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলন (৪০), বিকনা এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে ঝালকাঠি সরকারী কলেজ ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু (৩৫), ইছানিল এলাকার মনতাজ উদ্দিন এর ছেলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি হারুন হাওলাদার (৬০), বিকনা এলাকার মুজিবুর রহমান এর ছেলে মো. সাগর (৩০) ও নয়ন।

অপরপক্ষের আহতরা হলেন, যুবলীগকর্মী মো. মামুন (৩৫), আব্দুল জলিল (৪০) ও ছাত্রলীগ কর্মী শফিকুল ইসলাম (২৬)।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি হারুন হাওলাদার জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে পদ নিয়ে একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির ওরফে জিএস জাকির ও কামাল শরীফের দ্বন্দ্ব হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সকালে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় তারা মোটরসাইকেল নিয়ে ঝালকাঠি পৌর শহরে মহড়া ও আনন্দ করছিলেন। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের পশ্চিম পাশে এসে পৌঁছালে জিএস জাকির ও কামাল শরীফের নেতৃত্বে পিস্তল, অস্ত্র ধারালো, জিআই পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা গুলি করে, পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাদের অন্তত ১০ জনকে আহত করে। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন তিনিসহ (হারুন) যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অপু, সাগর, নয়ন ও রবিউল। এ ঘটনায় ঝালকাঠি শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ শহরে টহল দিচ্ছে।

সৈয়দ মিলনের স্ত্রী মারিয়া ইসলাম বলেন, আমার স্বামীসহ নেতাকর্মীরা সরকারের পক্ষে আনন্দ মিছিল করছেন। হামলাকারী প্রকাশ্যে আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করাসহ পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। আমি এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই।

আহত সাগর বলেন, সৈয়দ মিলনকে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক করায় জিএস জাকির ও কামাল শরীফরা মানে না। তারা বিএনপির লোকজন নিয়ে রাজনীতি করেন। এ নিয়ে জিএস জাকির ও কালাম শরীফের সঙ্গে সৈয়দ জাকিরের বিরোধ রয়েছে। এর জেরে তাদের বহরে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা গুলি করাসহ বেধড়কভাবে আমাদের পিটিয়েছে ও কুপিয়েছে। বহরের অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং সৈয়দ মিলনের রানে গুলি লেগেছে।

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শহরের গোরস্থান এলাকা থেকে এসে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল প্রবেশ করে। এ সময় কৃষ্ণকাঠি এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা জলিলের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়।

মিলনের সমর্থকরা তাদের মহড়ার পেছন দিক থেকে হামলা করে দুইজন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আহত করে। এরপরে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুইপক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি যাওয়ার আগে প্রশাসন গিয়েছে।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিমে প্রেরণ করা হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। এখন কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তাবাজার/এম আই