ব্যাপক অর্থে পদ্ধতিগতভাবে জ্ঞানলাভের প্রক্রিয়াকেই শিক্ষা বলা হয়ে থাকে। তবে শিক্ষা হল সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের অব্যাহত অনুশীলন। শিক্ষা শিশুর মৌলিক অধিকার গুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু যে অঞ্চলে শিশুর শিক্ষার জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা নেই সেখানে শিক্ষার আলো কিভাবে ছড়াবে?

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ঘেঁষা দুর্গম এবং গভীর পাহাড়ি অঞ্চল ঘুরে দেখলে তার বাস্তব উদাহরণ পাওয়া যাবে। এইসব দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কিছু মুসলিম পরিবার গুচ্ছবদ্ধভাবে বসবাস করে থাকে। এসব এলাকার আশেপাশে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা তো দূরের কথা, এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সঙ্গে নগরায়নের কোন যোগাযোগ পর্যন্ত নেই। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার গুচ্ছ পরিবারের শিশুরা যাতে ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য পরিবারের বড়জন আরবি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে থাকে। এতে তাদের পরিবারের প্রতিটি সন্তান ধর্মীয় শিক্ষা এবং যাতে মূল্যবোধের মাধ্যমে নিজেকে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে৷ শুধু যে মুসলিম পরিবার থাকে এমনটিও নয়, এসকল অঞ্চলে আদিবাসী সহ অন্যান্য ধর্মের লোকেরও বাস। তাদের সবার একই রকম অবস্থার চিত্র ফুটে ওঠে।

মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ২৬তম পরিচ্ছেদ অনুযায়ী সমস্ত মানুষের শিক্ষার অধিকার আছে। এই শিক্ষা (ন্যূনতমপক্ষে প্রাথমিক স্তরে) বিনামূল্যের হবে। প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হবে। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষা সর্বসাধারণের জন্য সুলভ হবে এবং উচ্চশিক্ষা মেধার ভিত্তিতে সবার জন্য সমভাবে লভ্য হবে। সেখানে একজন শিশুর মৌলিক অধিকার অনুযায়ী শিক্ষা বাধ্যতামূলক পাওয়ার কথা। অথচ দূর্গম পাহাড়ি শিশুদের শুধু পারিবারিক শিক্ষা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। কিছু কিছু অঞ্চলে এদের জন্য হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান থাকলেও অধিকাংশ অঞ্চলেই নেই কোন সু ব্যবস্থা। এসকল শিশুর জন্য সরকারি- বেসরকারি ভাবে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা সময়ের দাবি।

লেখক: মেহেদী হাসান সজীব।