মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । উপজেলার হারুকান্দি ইউনিয়নের ফৈজনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফফারে বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানায়,মাস দুয়েক আগের থেকেই এই প্রধান শিক্ষক একাধিকবার আমার সাথে স্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়। স্যারকে কিছু কইলে ধমক দেয়। এসব ঘটনা আমার মায়ের কাছে অভিযোগ করলেও মা প্রধান শিক্ষকের ভয়ে কোথাও কোন অভিযোগ করতে সাহস পাইনি। ভুক্তভোগী আরো জানায় প্রধান শিক্ষকের নিকট আমি ছুটি চাইলে আমাকে বলে আমি তোমাকে ছুটি দিতে পারি তুমি আমাকে কি দিবে ?

এলাকাবাসী জানায়, ওই ছাত্রীকে স্লীলতা হানি করার সময় কয়েকবার আমাদের চোখেও ধরা পড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৫  আগস্ট ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে নিয়ে স্কুলে আলোচনায় বসে। আলোচনার এক পর্যায়ে স্থানীয় অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হলে প্রধান শিক্ষক স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যান।

স্থানীয় অভিভাবকরা আক্ষেপ করে বলেন, আমরা শিক্ষকদের সম্মান,ভক্তি ও শ্রদ্ধা করি। আর এই শিক্ষক নামের নর পিচাশ ইতিপূর্বেও এই উপজেলার করিমকান্দি আদাসুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনীর ছাত্রীদেরকে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এ বিষয়েও ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি আক্কাস বিশ্বাস।

তারা আরো বলেন, এই নর পিচাশ শিক্ষক জাতীর কলঙ্ক। প্রশাসনের নিকট এই নর পিচাশ গাফফারের উপযুক্ত বিচারের প্রার্থনা জানান তারা।

ভূক্তভোগী ওই ছাত্রীর মা জানান, ওই শিক্ষক আগেও আমার মেয়ের সাথে স্লীলতাহানির ঘটনা ঘটিয়েছে আমি কিছু বলতে সাহস পাইনি। স্কুলে এই বিষয় নিয়ে আলোচনার পরের দিন সকালে প্রধান শিক্ষক গাফফার আমার বাড়িতে এসে হাতে পায়ে ধরে মাফ চায় আর বলে আমার ভুল হয়ে গেছে আর কোন দিন এরকম ভুল হবে না। তিনি আরো জানান, তার ওই ভুল আমি কোন দিন ক্ষমা করবো না। আমার বড় মেয়ের জামাই আসলে থানায় অভিযোগ করবো। আমি ওই প্রধান শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফফারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তার মোবাইল ফোনটি রিসিভ না করে কেটে দেন। এ বিষয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,ঘটনাটি মিথ্যা বানোয়াট।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সিদ্দিক বলেন, আমি লোকমারফতে জানতে পারি প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফফার একটা ছাত্রীর সাথে অশালীন আচরন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মাইনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

হরিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার আদিত্য জানান, এ বিষয়ে আমার নিকট কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

বার্তা বাজার/জে আই