নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার শুটিবাড়ি বাজারে পশু কেনা-বেঁচা হাটে ইজারাদারের ইচ্ছানুযায়ী টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও মেলিনি কোন প্রতিকার।

নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সব পশুর হাট থেকে প্রতিটি গরু ও মহিষের জন্য সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা, ছাগল কিংবা ভেড়ার জন্য ১৮০ টাকা টোল (খাজনা) আদায় করতে পারবে ইজারাদার। কিন্তু হাটের ইজারাদারেরা এই নিয়ম উপেক্ষা করে প্রত্যেক গরুর ক্রেতার কাছ থেকে ৪০০ ও বিক্রয়কারীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা আর খাসির ক্রেতার কাছ থেকে ২০০ ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২০০ টাকা করে টোল আদায় করছেন। বাড়তি মূল্যের জন্য টোল আদায়ের রশিদে কিছু বলাও হচ্ছে না। এছাড়াও রসিদে টোল ফি লেখার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ওই হাটে সাতজান‌ থেকে আসা গরু ক্রেতা মোঃ স্বপন মিয়া (৩৫) বলেন, ছত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে একটা গরু ক্রয় করেছি। কিন্তু হাটাইকে (ইজারাদার) দিয়েছি (টোল/রশিদ) ৪০০ টাকা আর বিক্রেতা দিছে ৩০০ টাকা।

চরখড়িবাড়ী এলাকার ছাগল ক্রেতা বাবুল মিয়া ও বিক্রেতা আবদুস সালাম জানান, একটি ছাগল ক্রয় করতে ইজারাদারের রশিদ লেখা (টোল আদায়ের রশিদ) নিয়েছে ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছে ৩০০ টাকা। অন্যান্য হাটের চেয়ে এ হাটে টোলের পরিমাণ বেশি।

ওই হাটের গরু বিক্রেতা মোঃ নান্নু মিয়া জানান, হাটে গরু ক্রয় করলে ক্রেতা বিক্রেতা দুজনকেই টাকা দেয়া লাগে।

গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) গরু ক্রেতা মোঃ রাকিব ও বিক্রেতা লেবু থেকে রশিদ বাবদ নেয়া হয়েছে ৭০০ টাকা। যার রশিদের ক্রমিক নাম্বার ২৬১৬। একই দিনে ছাগল ক্রেতা সাহিনুর ও বিক্রেতা জগদীশ থেকে নেয়া হয়েছে রশিদ বাবদ ৩০০ টাকা যার রশিদের ক্রমিক নাম্বার ১৬১৮।

গত শুক্রবার (৭ জুলাই) মোঃ জহিরুল ইসলাম থেকে ছাগল ক্রয় বাবদ নেয়া হয়েছে ৩০০ টাকা। যার রশিদের ক্রমিক নাম্বার হচ্ছে ৩৩০৬।

এছাড়াও গত ঈদুল আযহার পূর্ববর্তী বেশ কয়েক দিন ওই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা দুজনের নিকট ছাগল প্রতি ৪০০ টাকা এবং গরু প্রতি নেয়া হয়েছে ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মাসের (২৪ জুন শনিবার) বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই হাটের ইজারাদারকে সতর্ক করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ওই হাটের একাধিক রশিদ লেখক নাম গোপন রাখা শর্তে জানান, ইজারাদার যেভাবে নির্দেশনা দেন আমরা সেভাবেই কাজ করি। ইজারাদারের সাথে কথা বলে সব জেনে নিন।

এ প্রসঙ্গে হাটের ইজারাদার মোঃ আব্দুল গাফফারের সাথে বার্তাবাজারের প্রতিবেদক মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা আর সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ বেলায়েত হোসেনকে বার্তাবাজারের প্রতিবেদক মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তা আর সম্ভব হয়নি।

বার্তাবাজার/এম আই