আজ সোমবার জাতীয় সংসদের ১৯০ ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন। সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে  বিকেল চারটা পর্যন্ত। ভোট হবে ব্যালটে। সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সমগ্র নির্বাচনী এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে তিনস্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র পাঁচ মাস আগে এই নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের তেমন আগ্রহ নেই। তাই ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

এদিকে রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান, বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকার এই ভোট যাতে সুষ্ঠ হয় সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নির্বাচনের আগে  ব্যালটে ভোটগ্রহণ করা নিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি নির্বাচন কমিশন। তাই আজ ভোটগ্রহণকালে কঠোর অবস্থানে থাকছে ইসি। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনও সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে ইসি।

দলীয় সরকারের অধীনে ভোট হওয়ায় এ নির্বাচন নিয়ে নিজেদের নিরপেক্ষতা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য ভোটগ্রহণ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। ইসির চাহিদার আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে এটি একটি উপনির্বাচন হলেও ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সক্রিয় কর্মকান্ডের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে না পারলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ পচিশ হাজার দুইশত পাচ জন। আর ভোট কেন্দ্র ১২৫টি। এসব কেন্দ্রে ভোট কক্ষ রয়েছে ৬০৫টি। এই উপনির্বাচনে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং  ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২১ জন করে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে অস্ত্রসহ পাঁচজন পুলিশ, অস্ত্রসহ ২ জন আনসার সদস্য এবং অস্ত্র ছাড়া লাঠি হাতে থাকবে আনসারের ১২ জন সদস্য। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের ২ জন অতিরিক্ত সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।

ভোটের এলাকায় এছাড়াও নিয়োজিত থাকবে পুলিশের ১০টি মোবাইল টিম ও পাঁচটি মোবাইল স্ট্রাইকিং টিম। আরও থাকবে র‌্যাবের ছয়টি টিম ও ছয় প্লাটুন বিজিবি। নির্বাচনকালে অপরাধ আমলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ পরিচালনায় ১৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ছয়জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ও যুব উন্নয়ন সংস্থার ২১ জন পর্যবেক্ষক।

নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান জানান, ঢাকা-১৭ আসনটি উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নং ওয়ার্ড ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন আইন অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ শনিবার রাত ১২টার পর থেকেই সব ধরনের প্রচার বন্ধ করা হয়।

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী সাতজন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, গণতন্ত্রী পার্টির মো. কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আকতার হোসেন, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান ও স্বতন্ত্র মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম)। গত ১৫ মে এ আসনের এমপি চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)  মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়।