জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা জাতীয় পার্টি।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪ টায় তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে উপজেলা জাতীয় পার্টির আয়োজনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এরশাদের স্মরণসভা ও দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। তাড়াইল-সাচাইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইম দাদ খান নওশাদ এর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কিশোরগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম ভুঁইয়া শাহীন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হক আকন্দ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস সুলতানা। অন্যাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, জাওয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক রতন, দামিহা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুল হক আজহার, দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দীন ভুঁইয়া আসাদ, তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ছাইদুর রহমান মুন্সি, উপজেলা জাতীয় পার্টি নেতা ফরিদুজ্জামান বাদল, উপজেলা যুব সংহতির সাবেক সভাপতি শাহ আলম সিদ্দীকি, বর্তমান সভাপতি আশরাফুল আলম রুবেল, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আর এস রায়হান উদ্দিন সহ জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ।

জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম ভুঁইয়া শাহীন হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের জীবনী পর্যালোচনা করতে গিয়ে বলেন, হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ বর্তমান কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় তার নানার বাড়িতে জন্ম নেন। তার পৈত্রিক নিবাস অবিভক্ত ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা শহরে। তার বাবার নাম মৌলভী মকবুল হোসেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা আইনজীবী। পরে তার পরিবার কুচবিহার থেকে রংপুরে চলে আসে। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ।

মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করে ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন তিনি। ওই বছরের আগস্টে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ সেনাবাহিনীর প্রধান হন। ১৯৭৯ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদ। দীর্ঘ ৯ বছর দেশ পরিচালনা শেষে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন। এরপর ১৯৯১ সালে গ্রেপ্তার হন এরশাদ। কারাগারে থেকেই জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে রংপুরের ৫টি আসন থেকে বিজয়ী হন।

১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্ত হন এরশাদ। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে জয়ী হয়। এরপর দশম ও চলতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি আরো বলেন, চলতি একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্যেই অসুস্থ হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সিএমএইচে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন এবং সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আলোচিত এ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

বার্তা বাজার/জে আই