বগুড়া শেরপুরে নানা অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০২২-২৩ এর কার্যক্রম। জাতীয় শিশু একাডেমির নির্দেশনার বেশিরভাগই হচ্ছে উপেক্ষিত।

শিশুরা থাকুক হাসিতে, শিশুরা থাকুক খুশিতে এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে সোনার বাংলা বিনির্মানে তৃণমূল থেকে শিশু প্রতিভা অন্বেষণের উদ্দেশ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রতি বছর দেশব্যাপী এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে।

জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের জন্য এটি সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতা হতে বিজয়ী শিশুরা জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। অথচ শেরপুর উপজেলায় দায়সারা ভাবে চলেছে এর কার্যক্রম। উপজেলার বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়হীনতা, দায়িত্ব পালনে অনীহা ও অব্যবস্থাপনায় সরকারের নেয়া শিশু প্রতিভা অন্বেষণের এ বৃহৎ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে চলেছে বলে অনেকের অভিমত।

শেরপুরে গতকাল (১২ জুলাই) অনুষ্ঠিত জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতায় অভিভাবক সহ কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের মধ্যে দেখা গেছে তীব্র ক্ষোভ, সময়মতো চিঠি ইস্যু না করা, পর্যাপ্ত প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করলেও তাদের কর্মকর্তা সঠিক ভাবে না দেখা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড সকাল ১০টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত শিশুদের প্রতিযোগিতার কথা বলে ধরে রাখা। যন্ত্র সংগীত একোস্টিক গিটারে তিনজন প্রতিযোগী ২০২২ ও ২০২৩ সালে অংশ গ্রহণ করলেও বিচারকরা পক্ষ নিয়ে ১ জন কে ২০২২ সালের প্রতিযোগী ও দু’জন কে ২০২৩ সালের প্রতিযোগী হিসেবে দেখানো, পরবর্তীতে ২০২৩ সালের প্রতিযোগি দুজন প্রতিবাদ করলে আবারও দ্বায় সারা প্রতিযোগিতা নেওয়া হয়।

এই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিচারক সংখ্যা কম থাকা ও একদিনে সব রকম সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার কারণে কোমলমতি শিশুরা দুপুরের খাবার না খেয়ে রাত ১০ টা পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে, পরবর্তীতে প্রতিযোগিতার রেজাল্ট মৌখিক ভাবে না বলার কারণে শিশুদের অভিভাবকরা প্রতিবাদ শুরু করলে এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে রেজাল্ট মৌখিক ভাবে ঘোষণা করেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভবকরা।

অপরদিকে শিক্ষা মূলক প্রতিযোগিতায় শিশু একাডেমির নির্দেশনাতে উল্লেখ আছে যেকোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক,খ,গ গ্রুপে অংশ গ্রহণ করতে পারবে কিন্তু বিচারকরা ঘোষণা দেন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১ জন অংশগ্রহণ করতে পারবে এক পর্যায়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক প্রতিবাদ করলে তা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। শেরপুর উপজেলায় প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় গুলোর মধ্য থেকে মাত্র ৭/৮টি বিদ্যালয় অংশ গ্রহণ করেন। এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলেও সর্বক্ষেত্রে দেখা গেছে প্রতিযোগী সংকট।

এমনকি বিষয়টি অনেক মাদ্রাসাও অবগত নয়। ১২ জুলাই রবিবার সকাল ১০ টায় দুইটি ভেন্যুতে রাখা হয়েছে শিক্ষা বিষয়ক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিযোগিতা। ফলে দুটি ক্ষেত্রে অংগ্রহণেচ্ছুক প্রতিযোগির অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। একই দিনে একই সময়ে দুই ভেন্যুতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকেরা।

এদিকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা। তারা বলেন, সুষ্ঠুভাবে জাতীয় পর্যায়ের এ প্রতিযোগিতা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষ সহ গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা নেওয়ার জাতীয় শিশু একাডেমির নির্দেশনা থাকলেও গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে প্রতিযোগিতার ঘরে প্রবেশ করতে না দিয়ে বিচারকদের মনগড়া সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো, কামরুল হাসান বলেন, প্রতিযোগিতায় কোন অব্যাবস্থাপনা হয়নি। তাছাড়া সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের কথা আমার জানা নেই।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স ম রেজাউল করিম বলেন, প্রতিযোগিতায় অনিয়মের কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তবুও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি।

বার্তাবাজার/রাহা