পীরগঞ্জে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ মহামারী আকার ধারণ করায় গরু খামারী বিশেষ করে প্রান্তিক খামারীদের মাথায় হাত পড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী, চৈত্রকোল, মদনখালি, টুকুরিয়া, বড় আলমপুর, কুমেদপুর, বড় দরগাহ্, রামনাথপুর, পাঁচগাছী, চতরা, কাবিলপুর ইউনিয়নে প্রায় ৬ শতাধিক গরু মারা গেছে। মৃত গরুগুলোর মধ্যে অধিকাংশই বাছুর।

গ্রামাঞ্চলে পশু চিকিৎসকের নিকট গরু মালিকদের দীর্ঘ লাইন। কৃষকরা তাদের মূল্যবান গৃহপালিত গরু হারিয়ে বোবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন। কেউ কেউ শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে পাগল প্রায়। অনেক গরু খামারী বেসরকারি ঔষধ কোম্পানি থেকে প্রতিষেধক সংগ্রহ করে গরু বাঁচানোর চেষ্টা করছে। অথচ ভাইরাসঘটিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ অনেকটাই নির্বিকার।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.তাজুল ইসলাম জানান, পীরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সরকারীভাবে ভাইরাসটির প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

ডা.তাজুল ইসলাম বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা মূলত গৃহপালিত গরু এবং মহিষকে আক্রান্ত করে। প্রাণীর গায়ে ফোসকা দেখে প্রাথমিকভাবে এই রোগ শনাক্ত করা হয়। লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়ানোর প্রধান কারণ হতে পারে এক খামার থেকে অন্য খামারে গরু নিয়ে যাওয়া। মূলত এই গরু স্থানান্তরের মাধ্যমে অনেকদূর পর্যন্ত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর মশা, মাছির মাধ্যমেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাস গঠিত রোগ তাই এর সরাসরি কোন চিকিৎসা নেই। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করার জন্য লক্ষণ দেখে চিকিৎসা প্রয়োগ করতে হয়। এই ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

লাম্পি স্কিন ডিজিজে জ্বর এবং গায়ে ব্যথা থাকলে কিটোপ্রোপেন বা প্যারাসিটামল জাতীয় ব্যথানাশকগুলো ব্যবহার করা যাতে পারে। রোগ খুব তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে। গুটিগুলো ফেটে গেলে পটাশ বা আয়োডিন সলিউশন দিয়ে ক্ষতস্থান ধুতে হবে নিয়মিত। তাছাড়া ঘা হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সালফার পাউডার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্ষত স্থানে ব্যবহার করতে হবে।

বার্তাবাজার/এম আই