কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় মা ও ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। একটি কালো টুপির সূত্র ধরেই হত্যাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন পুলিশ। মা ও ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে যুবক।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) মধ্যরাতে উপজেলা সদরের পাঁচড়া ব্যাপারী বাড়িতে ওই হত্যাকাণ্ডর ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, নিপা আক্তার (২৭) ও তার আট বছর বয়সী ছেলে আলী আহসান মুজাহিদ। নিহত নিপা চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচরা গ্রামের বাসিন্দা সংযুক্ত আরব-আমিরাতপ্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।

এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের ভাসুরের দুই ছেলে মঈনুল হাসান শুভ (২২) ও আবদুল্লাহ আল শাহেদকে (১৮) আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নিপা তার ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশেই মামাশ্বশুর আজিজুল ইসলামের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। এ সুযোগে ঘাতক ঘরে ঢুকে লুকিয়েছিল। রাতে বাড়ি ফিরে নিপা তার ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়লে আনুমানিক আড়াইটার দিকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাদের গুরুতর আহত করে। এ সময় তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে শিশু মুজাহিদ ও তার মা নিপাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিপাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আশংকাজনক অবস্থায় শিশু মুজাহিদকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

চৌদ্দগ্রাম সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, মা-ছেলে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। যে কক্ষে হত্যা করা হয়, তার পাশের কক্ষে একটি টুপি পাওয়া যায়। এ বাড়িতে কোনো পুরুষ না থাকার কারণে আমাদের সন্দেহ হয় টুপিটি কার? পরে কালো টুপির সূত্র ধরেই ঘাতক শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শাহেদ জানায়, শাহেদের মা প্রায় সময় পারিবারিক কলহের কথা বলে তার কাছে কান্না করতো। এতেই সে ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন মাগরিবের নামাজের পর থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত সে ওই বাড়িতে গিয়ে অপেক্ষা করে। পরে বাড়ির পাশে একটি মসজিদে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর মসজিদে জুতা রেখে খালি পায়ে ওই বাড়িতে আসে। তারপর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে ঠাণ্ডা পানি বের করে খায়।

একপর্যায়ে সিঁড়ির নিচ থেকে লাকড়ি এনে এলোপাতাড়ি দুইজনকে পিটিয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে তার মাদরাসায় চলে যায়। মাদরাসা বন্ধ থাকায় দেয়াল টপকিয়ে মাদরাসার ভিতর প্রবেশ করে। বৃষ্টি থাকায় তার লুঙ্গিটি ভিজে যাওয়ায় অপর একজনের লুঙ্গি পড়ে সে মাদরাসায় ফজরের নামাজে শামিল হয়। এরপর আমরা তাকে আটকের পর ঘটনার বর্ণনা দেয় বলে তিনি জানান।

বার্তাবাজার/এম আই