কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঘুমন্ত মা ও তার শিশু পুত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা সদরের পাঁচড়া বেপারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের দুবাই প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নিপা আক্তার (২৭) ও তার আট বছর বয়সী ছেলে আলী আহসান মুজাহিদ। বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভরঞ্জন চাকমা।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিপার স্বামীর ভাইয়ের ছেলে আবদুল্লাহ আল শাহেদ ও শুভ নামে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান জানান, আবদুল্লাহ আল শাহেদ নামে ওই যুবকই তার চাচী এবং চাচাতো ভাইকে হত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা তার জবানবন্দি নেয়ার জন্য আদালতে পাঠাবো।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে নিপা তার ছেলেকে নিয়ে প্রতিবেশী মামা শ্বশুর আজিজুল ইসলামের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। ধারণা করা হচ্ছে, এ সুযোগে ঘাতক ঘরে ঢুকে নির্মাণাধীন টয়লেটে লুকিয়েছিল। রাতে বাড়ি ফিরে নিপা তার ছেলেকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়লে আনুমানিক আড়াইটার দিকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাদের গুরুতর আহত করা হয়।

এসময় তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে শিশু মুজাহিদ ও তার মা নিপাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নিপাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশু মুজাহিদকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।

নিহত নিপা আক্তারের বাবা জালাল আহমেদের অভিযোগ, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে নিপার স্বামী আনোয়ার হোসেনের ভাতিজা মঈনুল হাসান শুভ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, মা-ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। বুধবার সকালে নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নিহত নিপার সাথে তার ভাসুরের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের সাথে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফাতেমার ছেলে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় আবদুল্লাহ আল শাহেদ ও শুভ নামে দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

বার্তাবাজার/রাহা