পটুয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মারধরের মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন পটুয়াখালী পৌর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শিহাব মোঃ সগির। ১৯ জুন সোমবার সদর রোডস্থ পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি পটুয়াখালীর একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। এর পাশাপাশি আমার একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আমার ব্যাবসা, সামাজিক ও রাজনৈতিক সুনাম নষ্ট করতে একটি চক্র দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমার নামে কছুদিন আগে কয়েকটি গনমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়েছে যে আমি না কি আল জামি নামের এক ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যাবসায়ীকে গত ১৩ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে পটুয়াখালী পৌর শহরের বিটাইপ বাজার থেকে ধরে টাউন কালিকাপুর ইউনিয়নের বহাল গাছিয়া এলাকার কালি বাড়ীর পাশের ধানক্ষেতে নিয়ে মারধোর করে যখম করেছি।

এর কারন হিসেবে ওই সংবাদ গুলোতে বলা হয়েছে জামি নামের ওই ছেলেটি নাকি আমার কাছে টাকা পাবে । আসলে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই ছেলের সাথে মূলত আমার একটি ব্যাবসায়ী লেনদেন রয়েছে। ২০২২ সালে আমার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পাওয়া একটি ভবন নির্মাণের কাজে দুবাই লাইন স্টোন পাথর প্রয়োজন ছিল। আর ওই ছেলে পাথরের ব্যাবসা করে বলে আমার সাথে তার পরিচয় হয়। আমি তাকে ১ হাজার টন পাথরের জন্য স্বাক্ষীদের সামনে বসে গত বছর মার্চের ১৩ তারিখে নগদ ৪৫ লক্ষ টাকা দেই। টাকা দেয়ার পরে এক সপ্তাহের মধ্যে তার আমার নির্মাণাধীন কাজের স্থানে পাথর পৌঁছে দেয়ার কথা থাকলেও সে পাথর দিচ্ছে না দেখে আমি তাকে ফোন করে পাথর দিতে বলি বা আমার টাকা ফেরত দিতে বলি। পরে সে গত বছরের ২৭ মার্চ আমার অফিসে এসে স্বাক্ষীদের সামনে তার নিজ নামের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ৪৫ লক্ষ টাকা লেখা একটি চেক দিয়ে যায়। পরে আমি সেই চেকটি নিয়ে ব্যাংকে গেলে ব্যাংক থেকে বলে যে চেকে সমপরিমাণ টাকা নেই। পরে রাগের মাথায় আমি তাকে ফোন করে কিছু উচ্চ বাচ্চ কথা বলি।

এরপর তাকে আর কিছু না বলে গত বছরের ১০আগস্ট আমি তার বিরুদ্ধে পটুয়াখালী মেজিস্ট্রেট আদালতে চেক ডিজওর্নার ও প্রতারনামূলক একটি মামলা দায়ের করি। যেটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। যেহেতু তার নামে আমি ৯ থেকে ১০ মাস আগে মামলা করেছি সেটি চলমান রয়েছে। তাহলে আমি তাকে কোন ধরনের আঘাত করে নিজের ক্ষতি কেনো করবো? আর জামি নামের ছেলেটিকে যেই স্থান থেকে ধরে অন্য যেই স্থানে নিয়ে মারধোর করার কথা সংবাদে প্রচার করা হয়েছে সেই দুটো স্থানের দুরত্বের মধ্যে পৌরসভা, বিভিন্ন সরকারি, বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়ির কয়েক’শ সিসি টিভি ক্যামেরা আছে যেটি সন্ধান করলেই ঘটনার বাস্তবতা পাওয়া যাবে যে এমন ঘৃন কাজ আমি করেছি কি-না। গনমাধ্যমে এই সব মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচার করে আমার নামে বদনাম ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার নামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রচারের পর থেকে ওই ছেলে তার নামে আমি যে মামলটি দায়ের করেছি সেটি তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছে ।

এমনকি আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদে আমি যে বক্তব্য দিয়েছি তার আংশিক ব্যবহার করা হয়েছে। মূল বক্তব্য সেইসব সংবাদে কেনো দেয়া হলো না আমি জানি না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। এছাড়াও ওই ছেলেকে আমি মারধোর করেছি ও জীবন নাশের হুমকি দিয়েছি সেই মর্মে নাকি আমার বিরুদ্ধে পটুয়াখালী সদর থানায় একটি জিডি হয়েছে। কিন্তু আমার নামে থানায় এমন একটি জিডি হয়েছে সেটাও আমি জানতে পেরেছি আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবে আমার বিরুদ্ধে থানায় কোনো জিডি বা অভিযোগ হয়েছে কি-না সেটা আমি অবগত নই। এছাড়া ওই ছেলের পিছনে একটি মহল কাজ করছে আমার রাজনৈতিক সুনাম নষ্ট করতে। ওই ছেলের কাছে পটুয়াখালীর অনেক ঠিকাদার লক্ষ লক্ষ টাকা পাবে যার প্রমান আমার কাছে আছে।

এ সময় শ্রমিকলীগ নেতা তার সম্মান ও সুনাম যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে সাহায্য চান।
সংবাদ সম্মেলনে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জি, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হৃদয় , বিভিন্ন গনমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক ও শ্রমিকলীগের বিভিন্ন নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বার্তাবাজার/রাআ