অননুমোদিত উপায়ে রক্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সরবরাহের দায়ে ঢাকার সাভারে এক ব্যক্তিকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইসমাইল হোসেন।

এর আগে, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে এগারোটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত সাভারের থানা রোডের একটি বাসাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ছিলো।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, এক ব্যক্তি কোনরকম ব্লাড ক্রসম্যাচ ব্যতীত এবং ব্লাড গ্রুপিং ছাড়াই রক্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সরবরাহ করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাত সাড়ে এগারোটায় সাভারের থানা রোডে একটি বাসায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করি। এসময় দেখতে পাই, আব্দুল জলিল নামের এক ব্যক্তি তার ভাড়া বাসায় স্বীকৃত মেডিকেল যোগ্যতা না থাকা সত্বেও অননুমোদিত উপায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে আসছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, প্রায় এক বছর ধরে এভাবে রক্ত সংগ্রহ করার পর বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্লাড ব্যাংকে সংগৃহীত রক্ত তিনি সরবারাহ করে আসছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, অপরাধীর অপরাধ স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাকে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন,২০০২ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অর্থদণ্ড তাতক্ষণিক ভাবে আদায় করা হয় এবং আসামীকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এধরণের অভিযান চলমান থাকবে।

অভিযান পরিচালনাকালে এসময় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো: মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখসহ সাভার মডেল থানার পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ব্ল্যাড ক্রস ম্যাচ হলো একটি পরীক্ষাগার পরীক্ষা, যা রক্তদানের আগে সঞ্চালিত হয় তা নির্ধারণ করতে যে দাতার রক্ত প্রাপকের রক্তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা বেমানান কিনা। এই পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো দাতার লোহিত রক্তকণিকার বিরুদ্ধে প্রাপকের মধ্যে অ্যান্টিবডিগুলির উপস্থিতি আলাদা করা। এই অ্যান্টিবডিগুলি স্থানান্তরের পরে দাতার লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠে পাওয়া যায়। একটি বেমানান ট্রান্সফিউশন গুরুতর হেমোলাইটিক অ্যানিমিয়া এবং এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

বার্তাবাজার/এম আই