ঢাকা জেলা (উত্তর) ডিবি অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা গরুচোর চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এসময় ৩টি চোরাই গরু এবং চোরাইকাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক ও উদ্ধার করে পুলিশ।

বুধবার (২১ জুন) দুপুরে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ে এসংক্রান্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান-পিপিএম (বার)।

এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (২০ জুন) রাতে ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক টিম সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতার ওই ৮ সদস্য হলো- সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার পারকুলগয়টা এলাকার মোঃ সহিদ এর পুত্র মোমিনুল (৩০), ঢাকা জেলার দোহার থানার পুষ্পখালী এলাকার মৃত বোরহানের পুত্র রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), ঢাকা জেলার সাভার থানার ঝাউচর এলাকার মৃত আঃ খালেকের পুত্র মোঃ খোকন (৪০), সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর থানার রোহাবাড়ী এলাকার আব্দুর রহমান এর পুত্র শফিকুল (৪৭), সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার মহিষামড়া এলাকার আয়নাল মাস্টার এর পুত্র আনোয়ার হোসেন (৩৬), রংপুর জেলার কোতোয়ালি থানার রামজীবন এলাকার মৃত দিলদার আলীর পুত্র মুক্তার হোসেন (৪০), সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার রামেশ্বরগাতী এলাকার মো: দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মোঃ ইব্রাহিম শেখ (২৬) এবং নওঁগা জেলার আত্রাই থানার তেজনন্দি এলাকার মৃত মান্নানের পুত্র মোঃ গাজী (৩৮)।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকে জানান, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা কে কেন্দ্র করে একাধিক গরুচোর চক্র সক্রিয়ভাবে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে গরু চুরি করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুন নবাবগঞ্জ থানাধীন বান্দুরা ইউনিয়নের কাঠালীঘাটা এলাকার জনৈক মনুরদ্দিন (৭০) এর বাড়ী থেকে চোর চক্র ২টি ষাড় ও ১টি গাভীসহ মোট ৩টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এঘটনায় দায়ের করার মামলার প্রেক্ষিতে চোর চক্রকে গ্রেফতার এবং চোরাইকৃত গরু উদ্ধার করার জন্য ডিবি (উত্তর) কে নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোবাশ্শিরা হাবীব খান এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর অফিসার ইনচার্জ মো: রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (বিপ্লব) এর নেতৃত্বে ২০ জুন তারিখে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ধৃত আসামী মোমিনুল ও রমজান শেখ ওরফে কালুকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে ৩নং আসামী মো: খোকনকে গ্রেফতার সহ সাভারের ঝাউচর ট্যানারী ৩নং গেইট সংলগ্ন খোকনের বাসা থেকে চোরাইকৃত ৩টি গরু উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে, রমজান শেখের দেয়া তথ্য মতে একই রাতে সাভার মডেল থানাধীন তেঁতুলঝোড়া এলাকা থেকে আসামী শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, এক মাস আগে ভাকুর্তার বেলওয়েথার এগ্রো ফার্ম হতে তার কয়েকজন সহযোগীর সহায়তায় তারা ৪টি গরু চুরি করেছিল। উপরোক্ত ৪ আসামীর স্বীকারোক্তি অনুসারে ২০ জুন মধ্যরাতে আশুলিয়া থানাধীন জিরানী এলাকা থেকে বাকী পাঁচ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এই পাঁচজন জানায়, ৭/৮ মাস পূর্বে ধামরাই থানাধীন নান্নার এলাকার রেজাউল করিম ওরফে মেঘুর বসতবাড়ীর গোয়ালঘর থেকে ৬টি গরু চুরি করে বিক্রয় করে প্রাপ্ত টাকা তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিল। এদের দেওয়া তথ্যমতে ধামরাই এলাকার গরু চোরাইকাজে ব্যবহৃত একটি নাম্বারবিহীন ট্রাক আশুলিয়া থানাধীন জামগড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের সংশ্লিষ্ট মামলায় বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং এই চোরচক্রের সাথে আরও কারা জড়িত আছে সে সংক্রান্তে তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও জানান এসপি মোঃ আসাদুজ্জামান- পিপিএম (বার)।

বার্তাবাজার/এম আই