ভেটেরিনারি বা কম্বাইন্ড ডিগ্রির সাথে পশুপালন ডিগ্রির কোনো মিল নাই। বাকৃবির ভেটেরিনারি ডিগ্রি বিশ্বমানের। সেখানে কম্বাইন্ড ডিগ্রির মাধ্যমে তাঁরা ভেটেরিনারি ডিগ্রির উচ্চমানকে নিম্নপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বর্তমান যুগে যেকোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। সেখানে দুটো ভিন্ন ভিন্ন ডিগ্রিকে এক করার প্রস্তাবনা একেবারেই যুক্তিযুক্ত নয়। সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রাণির উৎপাদন বিষয়ক কয়েকটি নন-ক্যাডার পদে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতি। সম্মেলনে এসকল কথা বলেন ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হান হাবিব। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুর একটায় পশুপালন অনুষদীয় সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সরকার। এসময় ওই পদসমূহে শুধুমাত্র পশুপালন ডিগ্রিধারীদের অন্তর্ভূক্তির দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রাণি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, পোল্ট্রি উন্নয়ন কর্মকর্তা, প্রাণি উৎপাদন কর্মকর্তা, জ্যু কর্মকর্তা, সহকারি ব্যবস্থাপক কর্মকর্তা পদে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই পদগুলো শুধু মাত্র পশুপালন ডিগ্রিধারীরা যোগ্য দাবিদার। ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রি মূলত ডিভিএম ডিগ্রি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ( শেকৃবি) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) থেকে ওই ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়া হয়। বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ যেখানে প্রাণিস্বাস্থ্য ও উৎপাদন বিষয়ে পড়ানো হয় যথাক্রমে ৭০ দশমিক ০৫ ও ২৩ শতাংশ সেখানে শেকৃবি ও বশেমুরবিপ্রবির কম্বাইন্ড ডিগ্রিতে পড়ানো হয় যথাক্রমে ৬১ ও ৩০ শতাংশ এবং ৬৭ দশমিক ৭৪ ও ২৫ দশমিক ২৭ শতাংশ।

অন্যদিকে পশুপালন অনুষদে সাড়ে চার বছরে প্রাণি উৎপাদন, প্রাণিস্বাস্থ্য ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে পড়ানো হয় যথাক্রমে ৭৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

সম্মেলনে পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ভেটেরিনারি ও কম্বাইন্ড ডিগ্রির মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নাই। কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারী কখনই পশুপালন ডিগ্রিধারীর সমকক্ষ নয়। আমার মনে হয় আমাদের আরো বেশি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে হবে।

পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আখতারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাস, অধ্যাপক ড. বাপন দে , পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতির সহ-সভাপতি মো. রেজওয়ান উল আমিন, সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বার্তাবাজার/রাআ