বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ইফতারে পঁচাবাসি ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে৷ এতে হলটির আবাসিক শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে। ইফতার ও নামাজ শেষে শিক্ষার্থীরা হলের নিচ তলায় বিক্ষোভ করে ও প্রশাসনের কাছে জবাব চেয়ে স্লোগান দেয়।

সেই স্লোগানের একটি ভিডিও এসেছে এই প্রতিবদকের কাছে৷ এছাড়াও হলটির ২০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। শিক্ষার্থীরা জানান, পোলাউর সঙ্গে দেওয়া মাংসের পুরোটাই পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত। পোলাউ থেকে একধরনের পঁচা গন্ধ আসতেছিলো। তাই অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা খেতে পারেনি। তাদের ভাষায় এগুলো খাদ্য নয় অখাদ্য। এছাড়াও ইফতারের সাথে বেগুনির ভিতর বেগুন ছিলো না, আলুর চপ ছিলো, তাও নষ্ট।

শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোশাইদ আনসারী বলেন, ‘ইফতারের খাবার বিতরণ নিয়ে যে পরিমাণ ভোগান্তি এবং লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে শেরেবাংলা হলের প্রশাসন তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। টোকেন বিতরণের সময় হলের কর্মচারীরা যে বাজে ব্যবহার করেছেন, মনে হচ্ছিল তাদের বাপের সম্পদ বিতরণ করতেছেন। খাবারের মান ছিল একদম বাজে প্রকৃতির। শিক্ষার্থীদেরকে নিম্নমানের খাবার খাইয়ে নিজেদের পকেট ভারি করা ছিল তাদের উদ্দেশ্য।’

শেরে বাংলা হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী মো. তুহিন হোসেন বলেন, ‘খাবারে যে মাংস দেওয়া হয়েছে তা পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত। আর যে পোলাও দেওয়া হয়েছে তা বাজারের সবচেয়ে নিম্নমানের চাল দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে৷ আগেও হলের ডাইনিংয়ের খাবারের মান নিয়ে অনেকবার প্রশ্ন উঠেছে। সারাদিন কষ্ট করে যারা রোজা রেখেছে তাদের সঙ্গে এটা স্পষ্ট বেয়াদবি।’ ভবিষ্যতে কোনো বিশেষদিন উপলক্ষে হলে খাবার দেওয়া হলে সেটা যেন শহরের কোনো স্বনামধন্য রেস্তোরাঁর ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়’ দাবি এই শিক্ষার্থীর।

এবিষয়ে শেরে-ই-বাংলা হলের ডাইনিং পরিচালক মো. মামুন বলেন, ‘খাবারের বিষয়ে একেক জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরণের কথা শুনেছি, একেকজনের মুখের স্বাদ একেকরকম। কেউ কেউ খাবার ভালো আছে বলেও জানিয়েছে।’

হলে এমন বাঁসি পঁচা খাবার পরিবেশন সম্পর্কে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট আব্দুল বাতেন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাতশত জনের খাবার রান্না করা হয়েছে, আপনি কতজনের কাছ থেকে শুনেছেন?’

অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মতামত নেওয়া হয়েছে এবং প্রমাণাদি আছে উল্লেখ করলে প্রোভোস্ট বলেন, ‘এবিষয়ে আমি এখনও কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে বলতে হবে৷’

এ বিষয়ে উপাচার্যর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া এ বিষয়ে নিউজটি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এই প্রতিবেদকে। ভবিষ্যৎে তিনি এসব বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন৷

উল্লেখ্য, এর আগে টোকেন পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে হল প্রশাসন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। জানা যায়, হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা এই টোকেন পদ্ধতিকে বিতর্কিত ও বিড়ম্বনা উল্লেখ করে উপাচার্যের কাছে টোকেন পদ্ধতির বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি চেয়ে লিখিত আবেদন করেন।