নামপত্তনসহ বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও মায়ের জমি জবর দখল করে চাষাবাদ করার অভিযোগ করেছেন লাভলী ইয়াসমিন নামে এক নারী। লাভলীর মামাতো ভাই স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা পেশী শক্তি খাটিয়ে এই জমি দখল করে চাষাবাদ করছেন বলে অভিযোগে উল্লখ করা হয়। এ নিয়ে তারা চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ন্যায় বিচারের জন্য অভিযোগ করা হয়েছে।
জুয়েল রানা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের গোলাম সোবহানের ছেলে ও স্থানীয় বকশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ঝিনাইদহ শহরের মডার্ণপাড়ার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী লাভলী ইয়াসমিন ও তার খালাতো বোন কুষ্টিয়া শহরের হরিশংকরপুর পাড়ার বাসিন্দা উম্মে হাবিবা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাদের মা ও খালারা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর ও মাজু মৌজায় নানির ওয়ারেশ হিসেবে ৮ বিঘা জমি পাবেন।
এই জমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের মামাতো ভাই স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা জবর দখল করে খাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তারা ওই জমি নাম খারিজও করেছেন। এখন জমি দখল করতে গেলে জুয়েল রানা জমির উপর যেতে দিচ্ছে না। অভিযোগকারীসহ তার মা ও খালারা গুরুতর অসুস্থ। জমি বিক্রি ছাড়া তাদের চিকিৎসা করার আর্থিক সঙ্গতি নেই। লাভলী ইয়াসমিন আরো জানান, বিবাদী মোঃ জুয়েল রানা তার মা মৃত নাজমুন নাহার. খালা মোছাঃ শামছুন নাহার ও মেজো খালা আঙুআরা বেগমের আট বিঘা দখল করিতে গেলে বা অন্য কোথাও বিক্রি করতে গেলে বাধা সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি স্থানীয় ও প্রশাসনিক ভাবে অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করার পরও স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা কারো পাত্তা দিচ্ছেন না। এমনকি আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে শালিসের জন্য ডাকা হলেও তিনি চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন।
পরে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহার ধমক খেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি ইউএনওর দপ্তরে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়ে ও বাদীদের সহায়তা করার কথা দিয়ে চলে যান। কিন্তু পরের দিন জুয়েল রানা ওই সব জমি দখল করে ধান লাগিয়ে দেন। বিবাদী জুয়েল রানা অভিযোগকারীদের শাসিয়ে এও বলেন, জমি যদি কেউ দখল করতে বা বিক্রি করেত আসে, তাবে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এ বিষয়ে জুয়েল রানা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো জমি দখল করেনি বরং তাদের সহায়তা করেছি। তারপরও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে, কারণ আমি সরকারী চাকরী করি। তিনি বলেন অভিযোগকারীরা মাজু ও মাধবপুর মৌজার ৫১ দাগে ৫৫ শতক জমির নামপত্তন করেছেন। সেই জমি তারা বিক্রি করতে চাইলে বেশি দাম চাচ্ছে।
তিনি বলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহা স্যার আমার চাকরীর অভিভাবক। তিনি যে বিচার করবেন তাই আমি মাথা পেতে নেব। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহা জানান, বিষয়টি আমার নলেজে আছে। আমি ওই অসহায় নারীদের জমির নামপত্তনে সহায়তাও করেছি। দেখি কি ভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়।