ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫জন আহত হন। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৪জন দাঙ্গাবাজকে গ্রেপ্তার করেছে।

আহতদের মধ্যে মামুন-(৩৮), সম্রাট -(১৬), মোঃ মনির-(৪০), রামিম-(২০), সাকিব-(২০), বাছির মিয়া-(৫১), সোহেল-(৪০), তাজিম-(১০), সাগর- (২৪), আশিক-(৩২), রোকসানা-(৫০) ও আলম মিয়া-(৩৪) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা গ্রামে দুইটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধে চলে আসছে। ইতিমধ্যে এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার দাঙ্গা-ফ্যাসাদ হয়। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়নের আমির উদ্দিনের গোষ্ঠীর বাবুল মিয়া। তার পক্ষে রয়েছেন একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইমাম উদ্দিনের গোষ্ঠীর মোঃ আবদুল কাইয়ুম এবং একই ইউনিয়নের ফালুর বাড়ির মোঃ রেনু মিয়া।অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়নের দুলাগাজীর গোষ্ঠীর বাড়ির মোঃ শাহআলম, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বুধাই মোল্লার গোষ্ঠীর মোহাম্মদ হোসেন ও বুধাই মোল্লার গোষ্ঠীর বাসিন্দা ও বর্তমান মেম্বার মোঃ আজদু মিয়া। পুরানো বিরোধের জের ধরে শুক্রবার রাতে দুই গ্রুপের লোকদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষ হয়।

রাতের সংঘর্ষের ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উভয় গ্রæপের লোকজন প্রতিপক্ষের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর-ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫জন আহত হয়।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ব্যাপক লাঠিপেটা করে দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় ১৪ দাঙ্গাবাজকে আটক করা হয়। কালিসীমা গ্রামের গৃহবধূ আমেনা খাতুন, শিউলী বেগম ও হ্যাপী আক্তার বলেন, জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়া (বাবুল টাওয়ার) এর নির্দেশে আমির উদ্দিনের গোষ্ঠী ইমাম উদ্দিনের গোষ্ঠী ও ফালুর বাড়ির লোকজন এসে আমাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাট ও আমাদেরকে বেদম মারধোর করেছে।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়া বলেন, আমি দাঙ্গা-ফ্যাসাদ পছন্দ করিনা। কেউ বলতে পারবেনা। গ্রামে দুইটা দল আছে। দুইটা দল হওয়ার কারনেই গ্রামে দাঙ্গা-ফ্যাসাদ হচ্ছে। আমি একটা দলে আছি, তবে ঢাকায় থাকি। আমি দাঙ্গা-ফ্যাসাদ কেউ করুক তা চাইনা। গ্রামে শান্তি চাই।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঠে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় ১৪ জনকে আটক করা হয়। তিনি বলেন পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রনে আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।