ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিশেষ অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন, লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ডাকাত সর্দার মনির ওরুফে কাটার মনির (২৮), মাসুদ (২৭), সামসুদ্দিন ওরুফে নানা (৫৬), আলিফ (২৫), জহিরুল (২৬), রোকন (২২) ও সাব্বির (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে জাহিদ (২৭) ও মো. শরীফ (২৫) দ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ২১ জানুয়ারি, গভীররাতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের মজিদ বেয়ারা এলাকায় বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া ডুপ্লেক্স বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন ডাকাত বোরহান উদ্দিন ও তার স্ত্রী আমিনা আক্তারের দ্বিতীয় তলার রুমের দরজার লক ও সিটকানি ভেঙ্গে রুমে ডুকে বোরহান উদ্দিন এবং তার স্ত্রীকে মারধর করে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং গামছা ও ওড়না দিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। তারপর ডাকাতরা রুমের ভিতরে ওয়ারড্রপে থাকা নগদ ৮৫ হাজার টাকা, বোরহান উদ্দিনের ২ ছেলের গলায় ধারালো ছেনদা ধরে কাঠের ওয়ারড্রপে থাকা একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, একজোড়া স্বর্ণের হাতের রুলি ও চারটি স্মার্ট মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। পরে এঘটনায় বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া (৪৩) বাদী হয়ে ৩১ জানুয়ারি, অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় (মামলা নং- ৬১, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭) পেনাল কোড দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, এই ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কাজ শুরু করেন। প্রথমে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও ঢাকার আশপাশের উপজেলার মনির ওরুফে কাটার মনির, মাসুদ, সামসুদ্দিন ওরুফে নানা, আলিফ, জহিরুল, রোকন ও সাব্বির গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে থেকে জাহিদ (২৭) ও মো. শরীফ (২৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এবং সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র ঢাকা জেলার আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক ছদ্মবেশে ঘুরে ডাকাতির জন্য বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ঠিক করতো। ডাকাতির পর পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন পেশায় কাজ শুরু করেন। এসময় তাদের দেওয়া তথ্যে বোরহানের বাড়ি থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ও ১৯ হাজার আটশত উদ্ধার করা হয়েছে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা অফিসার (ওসি) মাহাবুব আলম, পরিদর্শক (নি.) শরজিৎ কুমার ঘোষ ও এসআই (নি.) হিরন কুমার বিশ্বাস, এসআই (নি.) সাইদুজ্জামান, এসআই (নি.) নির্মল কুমার আগারওয়ালা প্রমুখ।