ট্রাকচালক হাফিজুল ইসলাম (৩০)। গত শনিবার (২৭ জানুয়ারী) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর শহরের ইসলামপুর এলাকা থেকে ব্যবসায়ী মোশারফ শেখের ১৫২ মণ শুকনা সরিষা গাড়ীতে বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলার উদ্দেশ্যে। একদিন পর গত রবিবার বেলা সাড়ে ১০টায় সরিষার মালিক মোশারফ ট্রাকচালক হাফিজুলকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পান। এরপর চারদিন অতিবাহিত হলেও, চালক হাফিজুলের ফোন বন্ধ থাকায় এবং সরিষা গন্তব্যে না পৌঁছায় বৃহস্পতিবার ঘোড়াঘাট থানায় এজাহার দেন সরিষার মালিক ব্যবসায়ী মোশারফ শেখ।

এরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে মাঠে নামে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের একটি বিশেষ দল। ঘটনার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা এবং তথ্য প্রযুক্তি সহযোগীতায় পুলিশ জানতে পারে ট্রাকচালক হাফিজুল ইসলাম গাজীপুর জেলায় অবস্থায় করছে।

পরে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ গাজীপুরের জয়দেবপুর থানা পুলিশের সহযোগীতায় ওই থানা এলাকার তালতলী গ্রামে অভিযান চালিয়ে চালক হাফিজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই এলাকা থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা মূল্যের সরিষা এবং ট্রাকটি (বগুড়া-ন-১১-১৮৩২) জব্দ করে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার ট্রাকচালক হাফিজুল ইসলাম (৩০) নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের মৃত নিজাম আলী মন্ডলের ছেলে। অপরদিকে মামলার বাদী এবং উদ্ধার হওয়া সরিষার মালিক মোশারফ শেখ (৩৪) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলহার গ্রামের মৃত ছফুর উদ্দীনের ছেলে।

মামলার বাদী মোশারফ শেখ জানান, গত শনিবার ১৫২ মণ সরিষা মুন্সিগঞ্জে পাঠানোর জন্য ঘোড়াঘাট পৌরসভার ২৪৫ শ্রমিক ইউনিয়নের ট্রাক বন্দবস্ত অফিসে গিয়ে নেতাদেরকে একটি ট্রাক ঠিক করে দিতে বলেন। তখন বন্দবস্ত অফিসের লোকজন চালানের মাধ্যমে একটি মিনি ট্রাক ঠিক করে দেন। সেই মিনি ট্রাকে সরিষা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায় চালক। পরে ট্রাক বন্দবস্ত অফিসের নেতাদের সাথে নিয়ে পুলিশের সহযোগীতা নেন তিনি।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গ্রেপ্তার ট্রাকচালক হাফিজুলের নেতৃত্ব একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার মালামাল কৌশলে আত্মসাৎ করে আসছে। ঘোড়াঘাট থেকে সরিষা লোড করার সময় তার গাড়ির যে নাম্বার ছিল, ট্রাকটি উদ্ধার করার সময় গাড়ীর নাম্বার অন্যটি পাওয়া গিয়েছে। চক্রটি সুকৌশলে একই গাড়িতে একাধিক ভূয়া নাম্বারপ্লেট ব্যবহার করে অপকর্ম করে আসছিল। গ্রেপ্তার আসামীকে শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, থানায় এজাহার দায়েরের ১২ ঘন্টার মধ্যে আমরা গাজীপুর জেলা থেকে কয়েক লাখ টাকা মূল্যের সরিষা উদ্ধার করেছি এবং ট্রাকসহ চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যেকোন ধরণের অপরাধ দমনে দিনাজপুর জেলা পুলিশ তৎপর রয়েছে। অপরাধ করে পার পেয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই।

বার্তা বাজার/জে আই