সাতক্ষীরার আশাশুনির খাজরায় কয়েকটি গ্রাম লবনাক্ত পানির মৎস্যঘর ছাড়া ভাবার উপায় নেই। কিন্তু বর্তমানে এসব এলাকায় তীব্র লবনাক্ততার মধ্যেও ছোট বড় আকারে সবজির চাষ শুরু হয়েছে। কেউ নিজর জমি, কেউ আবার অন্যের জমি বরগা নিয়ে স্বল্প পুঁজিতে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি চাষ করে আসছেন। যা এক দিক নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটছে, অন্য দিকে অতিরিক্ত সবজি বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন হচ্ছে। তবে এখানে সবজির চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মিঠা পানির উৎস্য। এই দুই খাত পরিবর্তন আসলে আরও সুফল পাবে স্থানীয়রা।

খাজরার সুকুমার মন্ডলের বাড়িতে দেখা যায়, চার পাশ লবন পানির মধ্য তার ভিটবাড়িতে বিভিন্ন শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়েছে। আলুর ফলন তোলার প্রস্তুতি চলছে। টমেটোর মাচানে কাঁচা পাকা টমটো ঝুলে আছে। পিঁয়াজ আর রসুনের গোড়ায় তাঁর স্ত্রী নিড়ানী দিছেন। পাশেই শালগম আর কপি গাছের পাতায় শিশিরের ছোয়া। লবনাক্ত এলাকায় বিকল্প মিঠা পানির ব্যবস্থা করে সবজি চাষে সফলতা মিলেছে সুকুমার মন্ডলের।

এমন চিত্র এখন ইউনিয়নর প্রায় বাড়িতে লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয় বাজার এবং মৎস্য সেটে প্রতিদিন সকালে এসব সবজি বিক্রি করতে দেখা যায় তাদের। এবছর উৎপাদিত সবজির ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা আরো নতুন নতুন চাষাবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

এ বিষয় সুকুমার মন্ডল জানান, আমার বাড়ির চারপাশ লবন পানি। আমার প্রায় ১ বিঘা ভিটাবাড়িতে বিভিন্ন সবজির চাষ করেছি। ১ কেজির মত আলুর বীজ বপন করেছিলাম। এখন প্রায় পাঁচ মনের মত আলু হবে বলে আশা করছি। বাড়ির এক পাশে একটি টিউবওয়েল বসিয়ে সেই পানি দিয়ে চাষ করেছি। তিনি আরও জানান, আমাদের এই গ্রামে বিকল্প পদ্ধতিতে মিঠা পানি সংরক্ষন করা গেলে আরও অনেক সবজির চাষ করা যাবে। আমি সবজি চাষ করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারছি।

বর্তমান তার জমিতে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, ঢেঁড়স, ঝিঙ্গা, বরবটি ও ধুন্দুল ছাড়াও অসময়ের বাঙ্গি ও তরমুজ রয়েছে।

এলাকাবাসী মনে করেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে লবনপানির এসব এলাকায় প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বিভিন্ন প্রনোদনা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করলে চাষিরা ঘুরে দাড়াঁবে। আগামীতে খাজরা ইউনিয়নকে কৃষিবান্ধব করতে মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদর এগিয়ে আসার আহবান জানান।

বার্তাবাজার/এম আই