মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীতে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঘিওর সরকারি কলেজের পাশে ও ব্রিজ সংলগ্ন কালীগঙ্গা নদীতে চলছে বালু উত্তোলনের মহাউৎসব।

এতে হুমকিতে রয়েছে ঘিওর সরকারি কলেজ ভবন, ব্রিজ, রাস্তা,মাদ্রাসা ও শ্মশানঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তবে প্রশাসনের নাকের ডগায় একাধিক অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করলেও অজানা কারনে নিরব ভূমিকায় প্রশাসন।

বালু মহাল আইন ২০১০ অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা এবং আবাসিক এলাকা হইতে সর্বনিম্ন ১ (এক) কিলোমিটারে মধ্যে বালু মহাল হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এবং কি সেখান থেকে ড্রেজিং করে বালু বা মাটি উত্তোলন বা বিক্রয় করা যাবে না।

ড্রেজিংয়ের ফলে কোনো স্থানে স্থাপিত কোনো গ্যাস-লাইন, বিদ্যুৎ-লাইন, পয়ঃনিষ্কাশন-লাইন বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ লাইন বা তদ্সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার আশংকা থাকে তাহলে তা আইন পরিপন্থি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনরাত সমানতালে ঘিওর সরকারি কলেজের পাশে ও ব্রিজ সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীতে একাধিক অবৈধ ড্রেজার দিয়ে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে প্রভাবশালী একটি মহল।

সরকারি স্থাপনা হতে আনুমানিক ২০০ গজের মধ্য থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে পড়েছে কলেজর বহুতল ভবন, ব্রিজ, রাস্তা,মাদ্রাসা, শ্মশানঘাট, ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল স্থাপনা। সেই বালু উপজেলার পিছনে পুরাতন স্টিল ব্রিজের পাশে বালুর স্তূপ করে দশচাকার ড্রামট্রাকের ম্যাধমে পরিবহন করা হচ্ছে এতে হুমকির মুখে পরেছে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক।

এই অবৈধ ড্রেজারগুলো নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করছেন মানিকগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল বাসারের ম্যানেজার গোলাম কিবরিয়া।

একাধিক স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বললে তারা জানায়, এই নদীতে যে ভাবে বালু উত্তোলন করছে আগামী বর্ষা আসলে কলেজ, ব্রীজ,মাদ্রাসা ও শ্বশানঘাটসহ যত স্থাপনা আছে তা নদী গর্ভে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের জানামতে ব্রিজ কিংবা কলেজ এর আশেপাশে ড্রেজিং করা যায় না। তারা কিভাবে বালু উত্তোলন করছে তা বুঝতে পারছি না, তবে এভাবে চলতে থাকলে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার স্থাপনা ধ্বংসের সম্মুখীন হবে।

ড্রেজার ব্যাবসায়ী আমিনুর বেপারীর সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে জানান, ভাই নিউজ করার দরকার নেই, আপনার বিকাশ নাম্বার দেন। তিনি আরো জানান, আমি বাসারের নিকট থেকে বালু কিনে ড্রেজার দিয়ে উত্তোলন করছি।

ড্রেজার ব্যাবসায়ী ইয়াসিন আরাফাত ময়না জানান, আমি বাসারকে টাকা দিয়ে ড্রেজার চালাইতাম,এখন বন্ধ রেখেছি।
মানিকগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল বাসার বলেন, আমি বালু মহাল ইজারা নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী বালু উত্তোলন করি। আমি কোন ড্রেজার মালিকের নিকট বালু বিক্রী করি নাই। আমার নাম করে অন্যান্য ড্রেজার মালিকরা বালু উত্তোলন করলে আমি কি করব।

এ ব্যাপারে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন,যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তা বাজার/জে আই