ইন্দুরকানীতে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগে এক প্রধান শিক্ষকের বেতন স্থগিত করেছে মাউশি। পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী সপ্তগ্রাম সন্মিরনী আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমারের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে একাধিক জালিয়াতির অভিযোগে তার নভেম্বর মাসের বেতন স্থগিত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
অসীম কুমারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযেগ সমুহ থেকে জানা যায়, (১) ওই বিদ্যালয়ে ২০০৪ সালের ২৮ অক্টোবর মাহামুদা খানম নামে এক শিক্ষককে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যানবেইজ জরিপে ওই শিক্ষিকার নামও রয়েছে। কিন্ত ২০১৯ সালে ওই প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভূক্ত হলে মাহামুদা খানমের স্থলে মোহর আলী মৃধা নামে এক শিক্ষকের নাম এমপিওভূক্ত হয়।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার জালিয়াতি করে মাহামুদা খানমের স্থলে মোহর আলীকে এমপিওভূক্ত করেছেন। মাহামুদা খানম তার এমপিও ফিরে পেতে গত ২১/৪/২০২১ তারিখে মাউশিতে পরে ২১/০৬/২০২১ তারিখে হাইকোর্টে রিট পিটিশন (৫৪৩০/২০২১) দায়ের করেন। এ অভিযোগ বর্তমানে উপ-পরিচালক, মাউশি, বরিশাল মহোদয়ের কাছে তদান্তাধীন আছে।
(২) সৌরভ মিস্ত্রী সহ আরো কয়েকজনের অভিযোগ থেকে জানা যায়, তারা ১৭/১০/২০২০ সালে পত্রিকায় অফিস সহকারী পদে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন। প্রধান শিক্ষক পর পর ৩ বার ইন্টারভিউয়ের তারিখ দিয়েও বিভিন্ন অজুহাতে পরীক্ষা বন্ধ করেন। পরে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি ও প্রতারনা করে একজন কে
গোপনে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগপ্রার্থীরা জেলা প্রশসকের কাছে আবেদন করলে তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া যায়। পরে শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিচালক কাওছার আহমেদ প্রধান শিক্ষককে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন এবং অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্পন্ন অফিস সহকারীর নিয়োগ বাতিল করে অধিদপ্তরকে অবহিতকরনের নির্দেশ প্রদান করা হয়। অতঃপর প্রধান শিক্ষকের বেতন স্থগিত করা হয়।
(৩) প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী হিসাবে রনজিৎ ডাকুয়া ২০০২ সালের ৬ অক্টোবর যোগদান করেন এবং ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত ওই পদের বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। কিন্ত একই ব্যক্তিকে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারী থেকে নিয়োগ দেখানো হয়। (৪) ব্যানবেইজের তথ্যানুসারে গৌতম বালা নামে একজনকে সহকারী শিক্ষক বাংলা পদে ২০০৪ সালের ৩০ নভেম্বর নিয়োগ দেখানো হয়। আবার একই পদে অর্থৎ বাংলা বিষয়ে গোলক চন্দ্র অধিকারী নামে একজনকে ২০০৪ সালের ২৪ অক্টোবর নিয়োগ দেখানো হয়।
চাকুরী প্রার্থী সৌরভ মিস্ত্রী জানান, পর পর ৩ বার ইন্টারভিউয়ের তারিখ দিয়েও বিভিন্ন অজুহাতে পরীক্ষা বন্ধ রাখেন। পরে একজন কে গোপনে নিয়োগ প্রদান করেন। মাহামুদা খানম জানান, “ আমি ২০০৪ সালে বিধিমত নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে থাকি। পরে প্রধান শিক্ষক ২০১৯সালে জালিয়াতি করে আমার স্থলে মোহর আলী মৃধা নামে একজনকে এমপিওভূক্ত করিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার জানান, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত চলছে। তবে কি কারনে আমার বেতন বন্ধ হয়েছে তা আমি জানি না।”
পিরোজপুর জেলা শিক্ষা অফিসার ইদ্রিস আলী আযীযী জানান, “দক্ষিণ ইন্দুরকানীর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিষয়ে ২ জন শিক্ষকের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগের আমার কাছে একটি তদন্ত চলছে। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে আমি রিপোর্ট প্রদান করবো।
বার্তা বাজার/জে আই