ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর উপজেলার দুলালপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ করে সাড়া ফেলেছেন প্রবাস ফেরত কৃষক আলমগীর ভূঁইয়া। জেলার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সফলভাবে কমলার চাষ করে ব্রাহ্মবাড়িয়ার কৃষি ব্যবস্থার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন আলমগীর। আলমগীরের বাগানজুড়ে ছেয়ে আছে সুস্বাদু রসালো ফল কমলা।

গাছের থোকায় থোকায় রসে টই টম্বুর কমলার নয়নাভিরাম দৃশ্য। স্বাদে ও গুণে অতুলনীয় এসব কমলা কিনতে প্রতিদিন দুর-দূরান্ত থেকে বাগানে আসছেন ক্রেতারা। প্রতি কেজি কমলা বিক্রী হচ্ছে ২শ টাকা দরে। প্রতিদিন ২/৩শ কেজি কমলা বিক্রী হচ্ছে এ বাগানে। আলমগীরের এ সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এখন অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, কমলার আবাদ বৃদ্ধিতে নতুন উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

সাইপ্রাসে থাকাকালীন অবস্থায় সেখানকার কমলা বাগান দেখে আকৃষ্ট হন আলমগীর ভূঁইয়া। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে সিদ্ধান্ত নেন কমলা বাগান করার। সেজন্য বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের একটি টিলায় দুই বিঘা জমি বর্গা নেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গা থেকে চায়না জাতের কমলার ১৮০টি চারা সংগ্রহ করে কমলার চাষ শুরু করেন আলমগীর। প্রথম দুই বছর বাগানে ফলন না আসলেও গত বছর থেকে বাগানে ফলন আসতে শুরু করে। প্রথম দফায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করে পৌণে পাঁচ লাখ টাকার কমলা বিক্রী করেন তিনি।

তবে চলতি মওসুমে ফলন এসেছে দ্বিগুনেরও বেশী। এবার ৩ লাখ টাকা খরচ করে যে ফলন এসেছে তাতে ১০/১২ লাখ টাকা মিলবে বলে আশাবাদী আলমগীর। এছাড়াও কমলা চাষে সফল হওয়ায় আলমগীর নতুন করে আরো ৩ বিঘা জমি নিয়ে শুরু করেছেন কেনু কমলা আর মাল্টার চাষ।

কমলা বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও ক্রেতারা বলেন, এ বাগানের কমলা অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। আমরা বাগান থেকে কমলা খেয়েছি এবং পরিবারের জন্য কিনেছি। তাছাড়া বাগানটি অনেক সুন্দর পরিবেশে করা হয়েছে সেজন্য প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্য ফুটে উঠেছে এখানে। এসময় ক্রেতারা বলেন, আলমগীরের এ সফলতা বেকার যুবকদের আলোর দিশারি হয়ে কাজ করবে।

কমলা চাষী ও সফল উদ্যোক্তা আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, সাইপ্রাসে থাকাকালীন অবস্থায় সেখানকার কমলা বাগান দেখে আমি বাংলাদেশে আমার নিজ গ্রামে কমলা বাগান করার সিদ্ধান্ত নেই। দেশে ফিরেই বাগান করার কাজ শুরু করে দেই। তারপর বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের একটি টিলায় দুই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে সেখানে চুয়াডাঙ্গা থেকে চায়না জাতের কমলার ১৮০টি চারা সংগ্রহ করে কমলার চাষ শুরু করি। প্রথম দুই বছরে আমার বাগানে কমলার ভালো ফলন না আসলেও গত বছর থেকে বাগানে ফলন আসা শুরু করে। আমি প্রথম দফায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করে পৌণে পাঁচ লাখ টাকার কমলা বিক্রী করি। তারপর চলতি মৌসুমে ৩ লাখ টাকা খরচ করে যে ফলন এসেছে তাতে আশা করি ১০/১২ লাখ টাকা পাবো। পাশাপাশি আমি নতুন করে আরো ৩ বিঘা জমি নিয়ে কেনু কমলা আর মাল্টার চাষ শুরু করেছি।

এদিকে বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাব্বির আহমেদ বলেন, আলমগীর ভূঁইয়ার সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এখন অনেকেই কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। পাশাপাশি কমলার আবাদ বৃদ্ধিতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নতুন উদ্যোক্তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

বার্তা বাজার/জে আই