ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের এক মাদরাসার পরিচালককে অর্থ ও নারী লোভী আখ্যায়িত করে তার অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী। সেই সাথে অভিযুক্ত মাদরাসা পরিচালকের অপসারণ দাবি করেন তারা।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তারুয়া হাফেজ নজরুল মার্কেটে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে স্থানীয় মহিউস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মোঃ অলিউল্লাহ ছোবহানীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও নারী ধর্ষণসহ নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ জানায় সংক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

তারুয়া গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বি ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস মেম্বারেরসভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন তারুয়া ইনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন বাউল, সাবেক ইউপি মেম্বার আলী আকবর ও সেলিম মিয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোসলেহ উদ্দিন সরকার, পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মজিদ ও সুচি প্রমুখ।

প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত এলাকাবাসী জানান, বিগত ১৯৯৫ সালে এলাকবাসীর উদ্যোগে তারুয়া মহিউচ্ছুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা প্রতিষ্ঠি হয়। এসময় স্থানীয় আলেম মাওলানা আব্দুস সোবহানকে এর পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। তারুয়া গ্রামের প্রয়াত আবু সাঈদের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম মাদরাসার জন্য ১৩ শতাংশ জায়গা ওয়াকফ করে দেন। এসময় ওয়াকফ করা জায়গাটিতে গর্ত থাকায় পার্শ্ববর্তী মার্কেটের সাথে বদল করে নিয়ে মাদরাসার অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। এলাকাবাসীর সমন্বয়ে গঠন করা হয় মাদরাসা পরিচালনা কমিটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে চলছিল মাদরাসাটি। শিক্ষার্থী ছিল দুই শতাধিক। কিন্তু এক পর্যায়ে এসে পরিচালক মাওলানা আব্দুস সোবহানের ছেলে মোঃ অলিউল্লাহ ছোবহানী পিতাকে ব্ল্যাক মেইল করে পরিচালকের পদটি ছিনিয়ে নেয়। এজন্য নিজের বাবাকে মারধরের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এরপর গ্রামের লোকজনকে বাদ দিয়ে অপরিচিত নাম ব্যবহার করে কমিটি করে নানা অনিয়ম ও অপকর্ম করতে থাকে। ফলে মাদরাসায় এখন আর কোন শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। কেবর দু-চার জন দরিদ্র শিশুকে দিয়ে মাদরাসার নামে বাড়ি বাড়ি চাল উঠানো হয়।

তারা জানান, অলিউল্লাহ ছোবহানী একজন নারী লিপ্সু চরিত্রহীন লম্পট যুবক। তার বিরুদ্ধে মাদরাসার কন্যা শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও বালক শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগ রয়েছে। কন্যা শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও অন্য একটি নারী পাচার মামলায় তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন। বালক শিশুকে বলাৎকারের বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে বিচারের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। অন্যদিকে মাদরাসার নামে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের নিকট থেকে অলিউল্লাহ বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। ইতোপূর্বে মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে ওয়াজ করতে জীন দাওয়াত করতে নিয়ে এসেছেন দাবি করলে অলিউল্লাহ ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন বাউল বাউল বলেন, এধরনের চরিত্রহীন লোক দিয়ে দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারেনা। এছাড়া মাদরাসার নামে উত্তোলিত ১০ লক্ষ টাকারও বেশী অলিউল্লাহ আত্মসাৎ করেছে। তার এ কুকর্ম ঢাকতে তিনি মাদরাসার জায়গার মীমাংসীত বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় অলিউল্লাহ ফেসবুক লাইভে এসে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছে, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমি এ ব্যাপারে সাইবার আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বর্তমানে এলাকাবাসী মাদরাসা থেকে তাকে অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে।

বার্তাবাজার/এম আই