মাত্র এক মিনিটের ঝড়৷ আর তাতেই লন্ডভন্ড গ্রামের পর গ্রাম। উড়ে গিয়েছে বাড়ির চালের টিন, ঘরের বেড়া৷ ভেঙে পড়েছে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি৷ ঘর চাপা পড়ে আহতও হয়েছেন কয়েকজন’ গ্রামবাসী৷

বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও টগরবন্ধ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন ভোর থেকেই অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিলো। দুপুরে হঠাত্‍ই গোঁগোঁ শব্দে ধেয়ে আসে ঝড়৷ কিছু বুঝে ওঠার আগেই উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর, ব্রাহ্মণ জাটিগ্রাম, বেজিডাঙ্গা, টগরবন্ধ ইউনিয়নের মালা, কৃষ্ণপুর, টগরবন্দ ও তিতুরকান্দি এলাকার প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এসব বাড়িঘরের কেউ চোখের সামনে দেখতে পান; ঘরের ছাউনি উড়ে চলে যাচ্ছে৷ ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুত্‍ সংযোগ৷ ঝড়ের দাপটে অসংখ্য বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে৷ সেগুলি গিয়ে পড়ে বিদ্যুতের তারে৷ ফলে তার ছিড়ে একাকার৷

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিদ্যাধর গ্রামে ঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় গোটা গ্রামটিই তছনছ হয়ে গিয়েছে৷ যত্র তত্র ভেঙে পড়ে আছে বড় বড় গাছ৷ ৩০টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। ঝড়ের সময় ঘরে চাপা পড়ে তিনজন আহত হয়েছে।পাশেই ব্রাহ্মণ জাটিগ্রাম নামে একটি ছোট গ্রাম। গ্রামটিতে কয়েকটি বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। একটি মাছের খামারের ঘর ভেঙে কয়েক লক্ষাধিক টাকার মাছের খাদ্য পানির নিচে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার মালা, তিতুরকান্দী এলাকায় গিয়েও গ্রাম জুড়ে শতাধিক বাড়িঘর ও কয়েক সহস্রাধিক গাছপালা ক্ষতিগ্রস্তের চিত্র দেখা গেছে। অর্ধশত পরিবার সহায়সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। ব্যাপক ফসলি জমিও নষ্ট হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবীর।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে জাহিদুল হাসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রজত বিশ্বাস, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ দেলোয়ার হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা পারভীন, গণমাধ্যম কর্মী, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যগণ।

জানতে চাইলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবীর বার্তা বাজার’কে জানান, ‘মাত্র এক মিনিটের ঝড়ে বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েকশো বাড়িঘরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের নামের তালিকা তৈরীর কাজ করা হচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে আছে। যাদের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন তাদের জরুরি সহায়তা প্রদান করা হবে। যাদের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার প্রয়োজন আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রাখবো।’

বার্তাবাজার/এম আই