আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রতিপক্ষের ৪০টির অধিক বাড়িঘর স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আবু তাহের বার্তা বাজার’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

থানা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর চরনারানদিয়া চরপাড়া এলাকায় প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মো. মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ৩০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। অপরদিকে মোসা. রাবেয়া বেগম নামে এক নারী বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামি করে অপর একটি মামলা করেছেন।

এছাড়াও জহুরা আক্তার নামে অপর এক ক্ষতিগ্রস্থ নারী ২০ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রত্যেক মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে এসব মামলা রুজু করা হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের বিজয়ী চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমান ও পরাজিত প্রার্থী খালিদ মোশাররফ রঞ্জু সমর্থকদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বিরোধ চলে আসছে।

এরই বিরোধের জের ধরে ইউনিয়নের উত্তর চরনারানদিয়া গ্রামে বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম মিজানুর রহমানের সমর্থক ইউপি সদস্য আজগার আলী পক্ষের লোকজনের সাথে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী খালিদ মোশাররফ রঞ্জুর সমর্থক কামাল মোল্যা ও আকবর মোল্যার পক্ষের লোকজনের মধ্যে সম্প্রতি কয়েক দফা সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে ইউপি সদস্য আজগার আলী’র পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ কামাল মোল্যা ও আকবর মোল্যার পক্ষের লোকজনের বাড়ি ঘরে বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শতাধিক দুর্বৃত্ত কয়েক ঘন্টাব্যাপী হামলা চালায়। এসময় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দৌঁড়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেও তাদের বাড়িঘরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামজুড়ে ধ্বংসের চিহ্ন। ঘরের টিনেরচালা, বেড়া, কুপিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জানালা-দরজা। বসতঘর, দোকান, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, কোনো কিছুই বাদ যায়নি নারকীয় হামলা থেকে। অক্ষত নেই ঘরের কোনো জিনিসপত্র। একদিন আগের সাজানো-গোছানো সংসার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

এছাড়া লুটে নেওয়া হয় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, কালার টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, গোয়ালের গরু, দোকানের মালামালসহ দামী জিনিসপত্র। অর্ধশত বাড়িঘরে ভাংচুর লুটপাটের মাধ্যমে সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থদের।

এবিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আবু তাহের বার্তা বাজার’কে বলেন, ‘বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। মামলায় ইতোমধ্যে দুইজন এজাহারভুক্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়াও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে। বর্তমান এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

বার্তা বাজার/জে আই