পটুয়াখালীর দুমকিতে জলিসা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তারের বিরুদ্ধে। এছাড়া প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আসার মোবাইল নম্বরের জায়গায় তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেন। যার ফলে মূল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সোমবার সরজমিনে গিয়ে জানাযায়, জলিসা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির ছাত্রী পারভিন আক্তারের প্রায় ৬ মাসের ৪৮০০ টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন না তারা। এছাড়া দশম শ্রেণির ছাত্রী হাফিজা আক্তারের প্রতিবন্ধী ভাতা টাকা আসার জায়গায় সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তার তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেন। যার ফলে প্রায় বছর খানেক প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সে। এবিষয়ে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ গত ২২ আগষ্ট সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তারকে পারভিনের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা না দেয়ার বিষয়ে লিখিত জবাব চাওয়া হয়।
শিক্ষার্থী পারভিনের নানী হালিমা খাতুন জানান, পারভিন ও লামিয়ার প্রতিবন্ধী টাকা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে তাদের । কিন্ত দীর্ঘ ৬ মাস যাবত পারভিনের প্রতিবন্ধী ভাতার কোন টাকা পাচ্ছেন না। এর আগে ২ বার টাকা পান পারভিনের পরিবার। কিন্ত পরের ৬ মাসের টাকার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান ও সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান টাকা আসেনি। আর টাকা না আসলে আপনাকে দিবো কিভাবে বলে চলে যেতে বলে পারভিনের নানী হালিমা খাতুনকে।
একই ভাবে জানাগেছ, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফিজার প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তার তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেন। যাতে করে হাফিজার টাকা শিক্ষিকা আখিনুরের মোবাইল নম্বরে চলে আসে। কিন্তু হাফিজার পরিবার কোন ভাতা পাচ্ছেন না বলে জানান তারা।
সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তার জানান, পারভিনদের পরিবারে কোন মোবাইল নম্বর ছিলো না তাই বিদ্যালয়ের নম্বর দেয়া হয়। যাতে তাদের প্রতিবন্ধী ভাতা আসে। আগে দুবার টাকা এসেছিলো সেটা তাদের দেয়া হয়। পরের ৬ মাসের টাকাও এসেছিলো কিন্ত আমি অসুস্থ থাকার কারনে মোবাইল সহিদ স্যারের কাছে দেই। তারপর শুনতে পাই যে মোবাইলে টাকা নাই। টাকা কিভাবে কোথায় গেলো এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষিকা আখিনুর বলেন, টাকা মনে হয় কেউ হ্যাক করে নিয়ে গেছে।
প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান জানান,৷ ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পারভিন আক্তারের ৬ মাসের টাকা না পাওয়ার ব্যাপারে তার পরিবারের লোকজন আমাদের জানালে সহকারী শিক্ষিকা আখিনুর আক্তারকে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ একটি লিখিত নোটিশ দেয়। দীর্ঘ দুই সপ্তাহ ধরে তার লিখিত কোন জবাব দেননি। তবে ২য় নোটিশ ২/১ দিনের মধ্যে দেয় হবে বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের পরিচালক এমএ হাকিম খান জানান, পারভিনের ৬ মাসের টাকা যখন বিদ্যালয়ের মোবাইলে আসে তখন মোবাইল আখিনুরের কাছে ছিলো এবং মোবাইলের পাসওয়ার্ড সে জানতো। তবে টাকা আসা মাত্রই পারভিনের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়া উচিত ছিলো তার। এছাড়া আখিনুরকে বিদ্যালয় থেকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। সেখানে যদি সে দোষী হয় তবে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মুঃ অলিউল ইসলাম জানান, প্রতিবন্ধীদের ভাতা কোন শিক্ষিকা যদি আত্নসাত করেন তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বার্তা বাজার/জে আই