ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের (আশ্রয়ণ প্রকল্পের) বরাদ্দপ্রাপ্ত ঘরে অনেকেই থাকছেন না। নিজেদের নামে ঘরগুলো বরাদ্দ নেওয়ার পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পূর্বের বাড়িতেই বসবাস করছেন বরাদ্দপ্রাপ্তরা।

তবে বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা এসব ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় পর্যায়ের ২য় ধাপে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পন্ডিতবানা এলাকার নিশিতলা বাজারের নিকট সড়কের দু’পাশে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ১৩টি ঘর। কিন্তু এই ১৩টি ঘরের মধ্যে মাত্র তিনটিতে পরিবার বসবাস শুরু করলেও এখনো ঘরে ওঠেনি দশটি পরিবার। এদের কেউ থাকেন নিজ বাড়িতেই, কেউ থাকেন ঢাকায়। এমনও আছেন, শুধু ঘর তালাবন্ধ করে চলে গেছেন, আর কখনো আসেননি। আবার কোন কোন ঘর উন্মুক্ত অবস্থায় অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। এসব ঘরের বারান্দায় বস্তায় ভরা খড়কুটোসহ নানা ময়লা-আবর্জনার স্তুপ।

আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সরকার বলেন, ‘এখানে আমরা তিনটি পরিবার বসবাস করি। যারা ঘর পেয়েও এখানে থাকেন না, তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘরবাড়ি রয়েছে। তাই তারা এখানে থাকেন না, শুধু ঘরগুলো দখলে রেখেছেন।’

আশ্রয়ণ প্রকল্পের অপর দুই বাসিন্দা পরেশ মন্ডল ও খোকন মন্ডল জানান, ‘তাদের যাতায়াতের নির্দিষ্ট কোন রাস্তা নেই। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পানি জমে যাতায়াতসহ আরও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়।’

আশ্রায়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ পাওয়া একজন সুশান্ত বিশ্বাস। তিনি ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর একদিনও থাকেননি। আশ্রায়ণ প্রকল্পের পাশেই তার নিজের বাড়ি। তার সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়; নিজের জমিতেই একটি পাকা ঘরে বসবাস করেন তিনি। এসময় বাড়িতে থাকা তার স্ত্রী কবিতা বিশ্বাস জানান, ‘যখন তারা সরকারি ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন তখন তাদের বাড়িতে ঘর ছিলো না। এখন বাড়িতে নতুন ঘর নির্মাণ করার কারণে তারা আর সরকারি ঘরে থাকেন না।’

ঘর বরাদ্দ পাওয়া সমীর কুমার বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি জানান, ‘আমরা সরকারি ঘরে থাকি না। তবে মাঝেমধ্যে গিয়ে গল্পগুজব করে চলে আসি।’

মিটুল বিশ্বাস নামে ঘর বরাদ্দ পাওয়া অপর এক ব্যক্তি জানান, ‘আমরা সরকারি ঘরে বসবাস করি না। তবে আমরা ঘরে ফসল রাখি।’

এবিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক বার্তা বাজার’কে জানান, ‘আমি এই উপজেলায় দায়িত্ব পাওয়ার আগে এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অনেকে এখানে থাকেন না শুনেছি। তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সত্যতা মিললে তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন উপকারভোগীদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আর যাতায়াতের সমস্যা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে।’

বার্তা বাজার/জে আই