ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থলবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তারদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের এই বন্দর ব্যবহার অনাগ্রহ হয়ে পড়বে বলে মনে করেছেন যাত্রীরা।

এই স্থল বন্দরের সাথে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যেসহ উত্তর পূর্ব ভারতের ৭টি অঙ্গ রাজ্যের সহজ যোগাযোগ মাধ্যম হওয়ায় ভারত ভ্রমণকারীদের কাছে অন্যতম আখাউড়া স্থলবন্দর।

এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে দৈনিক হাজার হাজার যাত্রী পারাপার করে থাকে। এতে করে ভ্রমণ কর আদায়ের মাধ্যমে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে।

জানাযায়,চলতি অর্থ বছরে (২০২৩-২৪) প্রথম মাস জুলাইয়ে এই স্থলবন্দর থেকে শুধু মাত্র ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ৯৭হাজার টাকা।

কিন্তু কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের অসহযোগীতা ও নানা ধরনের হয়রানির অভিযোগে এই বন্দর ব্যবহারে অনাগ্রহ প্রকাশ করে বলে জানা যায়। এতে করে সরকারের রাজস্ব কমে আসবে বলে মনে করে অনেকে।

নাম প্রকাশে অনেক যাত্রী কাস্টমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ভারতের আগরতলায় বিমানবন্দর থাকার সুবাধে ও আখাউড়া স্থলবন্দরের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ভাল হওয়ায় আমরা এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে থাকি। কিন্ত এখানে এসে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয় আমাদের। ভারত থেকে নিয়ম মেনে বৈধ জিনিস পত্র নিয়ে আসলেও তাদেরকে টাকা দিতে হয়। চিকিৎসা নিতে যাওয়া যাত্রীদের কাছ থেকেও কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে হয়রানি হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ সময় ভারতীয় নাগরীক সুভত সূত্রধর কান্না জড়িত কন্ঠে অভিযোগ করে বলেন, আমি ২৫ বছর পর বাংলাদেশের আত্নীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি, ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করে কাস্টমস অফিসে যাওয়ার পর,আমার ব্যাগ খুলে সাতটি শাড়ি কাপড় দেখতে পান কাস্টমস কর্মকর্তারা । এই শাড়ীকাপড় গুলোর জন্য তারা আমার কাছে সাড়ে ৪হাজার টাকা দাবি করেন । আমি গরীব মানুষ আমার ছেলে থেকে ৫শত টাকা আর মেয়ে থেকে ৫শত টাকা নিয়ে এখানে এসেছি। তাদের কাছে হাত জোর করে কাপড় গুলো ফিরত চাইলে, তখন তারা আমার কাছ থেকে ভারতীয় ৯ শত ৫০ টাকা রেখে কাপড় গুলো আমাকে ফিরত দিয়ে দেই । এই সাতটি শাড়ী কাপুড় আমার এখানকার আত্মীয়-স্বজনের জন্য নিয়ে এসোছিলাম।

এ সময় বাংলাদেশী আরো এক নাগরীক অভিযোগ করে বলেন, আমি গত দুই দিন আগে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বেড়াতে যায়। আজ শনিবার সকালে দেশে ফিরত আসলে কাস্টমস কাজ সম্পূর্ণ করার সময় আমার সিএনজি অটোরিকশা জন্য ২টি টায়ার নিয়ে আসলে তারা এই গুলোর জন্য আমার কাছে সাত হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তখন বললমা ২ হাজার ৬শত টাকার টায়ারের জন্য আমাকে এত টাকা টেক্স দিতে হবে। তখন তাদের সাথে রফাদফা করে ১২শ টাকা দিয়ে টায়ার গুলো নিয়ে আসি। তখন এখানকার কর্মকর্তারা এই ব্যাপারে বাহিরে কাউকে যেন না বলি আমাকে সাবধান করে দেন।

এসব বিষয়ে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন রাজস্ব কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ খানের সাথে যোগাযোগ করে হলে জানা যায়,উনি ঢাকাতে অবস্থান করছেন,পরবর্তীতে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ কামরুল পারভেজ এর কাছে জানতে চাইলে যাত্রী হয়রানী সহ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ওই দুই যাত্রীর মালামাল প্রথমে আটক করা হলেও পরে বিশেষ বিবেচনায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।একজনের কাছ থেকে ভারতীয় রুপি আর অন্য যাত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান টাকা নেওয়ার বিষটি তিনি জানে না।তবে কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

বার্তা বাজার/জে আই