আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের পুরো অংশে সফলভাবে চালানো হয়েছে ট্র্যাক কার। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন দিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নিয়ে যাত্রা করে ট্র্যাক কারটি। দুপুর পৌনে ১টার দিকে ট্র্যাক কারটি আখাউড়ার শিবনগর এলাকায় ত্রিপুরা সীমান্তের জিরোলাইনে পৌঁছায়।

মঙ্গলবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে বলে জানা গেলেও সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এই ট্রেন চালাতে আরো কয়েক দিন সময় লাগবে। তবে আগামী মাসের ৯ সেপ্টেম্বর সম্ভাব্য উদ্বোধনের দিনকে সামনে রেখে এই রেলরুটে কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। ওই দিন দুইদেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

আখাউড়া-আগরতলা রেলরুটে ট্র্যাককার চলছে গেল কয়েকদিন ধরেই। এই কারে করেই রেললাইনে পাথর ঢালা হচ্ছে। আজ প্রথমবারের মতো বিশেষ আকৃতিতে নির্মিত হালকা উজনের এই ট্র্যাক কার চলেছে সীমান্তের শূন্যরেখা পর্যন্ত।

প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারতের নয়াদিল্লির টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ প্রধান (কান্ট্রি হ্যাড) শরৎ শর্মা বলেছেন, আখাউড়া অংশের সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় রেললাইন বসানো হয়েছে। এখনো ভাড়ি ইঞ্জিনে ট্রেন চলাচলে আরো কিছু কাজ করতে হবে। তবে গ্যাং কারে করে আজ আখাউড়া অংশের পুরো রেললাইন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আরো ঠিক কি কি কাজ করা প্রয়োজন তা দেখে এলাম। আগামী দশ দিনের মধ্যে পুরো রেললাইন ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী হবে তিনি আশাবাদি।

বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্ব) প্রধান প্রকৌশলী ও আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিয়া, বলেছেন সীমান্ত পর্যন্ত রেললাইন বসানো হয়ে গেছে। ফিটিংস লাগানো শেষ হয়েছে। এখন বেলাস্টিং চলছে পেকিং দেওয়া হচ্ছে যাতে লেভেল ঠিক থাকে। তিনি বলেছেন, এই মাসের শেষের দিকে এই কাজ শেষে রেলইঞ্জিনে ট্রায়াল হবে। তিনি বলেছেন, ইমিগ্রেশন ভবনের কিছু কাজ বাকি আছে। তবে আগামী ৯ তারিখের মধ্যে অনেকটা উপযোগী করা যাবে।

আখাউড়া থেকে ভারতের ত্রিপুরার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত রেলরুটটি সাড়ে দশ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। এখানে সাড়ে ছয় কিলোমিটার অংশ বাংলাদেশে। বাকি সাড়ে চার কিলোমিটার আগরতলা অংশে। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও রেলযোগাযোগ বাড়াতে ভূমিকা রাখবে এই রেলরুট প্রকল্প। কলকাতা থেকে আখাউড়া হয়ে আগরতলা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে রেল যোগাযোগও স্থাপন হবে এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। আঠারো মাস মেয়াদি প্রকল্পটি চার দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর এখন ট্রেন চলাচলের উপযোগী করার কাজ চলছে।

বার্তাবাজার/এম আই