ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রিক্তা আক্তার (২০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে সন্তান। সন্তান প্রসবের খবর শুনে সোমবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক নবজাতক শিশু ও প্রসূতি মায়ের জন্য উপকরণ সহায়তা নিয়ে তাদের বাড়িতে ছুটে যান। এসময় নবজাতককে পরম মমতায় কোলে তুলে নেন তিনি। একইসঙ্গে নবজাতক শিশু ও প্রসূতি মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের হারুন শেখের মেয়ে রিক্তা। গত এক সপ্তাহ আগে বিছানায় শয্যাশায়ী অপ্রকৃতিস্থ রিক্তা একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান প্রসব করে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস; পরিবারটিতে রিক্তা, তার বাবা-মা ও এক ভাই সকলেই মানসিক ভারসাম্যহীন। রিক্তার মা মানসিক ভারসাম্যহীনতা হারিয়ে অনেক আগেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। বর্তমানে একমাত্র ফুফু রিনা বেগমের আশ্রয়ে রয়েছেন তারা।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. মো. আবিদ হোসেন চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করে বার্তা বাজার’কে জানান, ‘রিক্তা সাধারণ ভাবেই সন্তান প্রসব করেছেন (নরমাল ডেলিভারি)। ইউএনও’র নির্দেশে আমরা তার যথাযথ চিকিৎসাসেবা প্রদান করছি। বর্তমানে প্রসূতি মা ও নবজাতক সুস্থ আছে।’

আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আবু তাহের বলেন, ‘কোন এক মানুষরূপী হিংস্র জানোয়ারের লালসার স্বীকার মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। সদ্যোজাত সন্তানের বাবা হয়নি কেউ। বাবা নামের কাপুরুষের ব্যাপারে তদন্ত চলমান।’

জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হক বার্তা বাজার’কে জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী সন্তান জন্ম দিয়েছেন; এমন খবর পেয়ে ওসি-এসিল্যান্ডকে নিয়ে সেখানে যাই। শিশুটিকে দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। তাই তাকে কোলে তুলে নেই। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এটা এক কঠিন বাস্তবতা। পাগলিরা মা হয় কিন্তু বাবাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রশিক্ষিত মানুষ ছাড়া প্রসব করানোতে মায়ের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় সঠিকভাবে তাকে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। ডাক্তাররা চেষ্টা করছেন। তবে শিশুটি সুস্থ আছে।

বার্তা বাজার/জে আই