নবজাতকের জন্য মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই জানিয়েছেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র আয়োজনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৩ এর তৃতীয় দিনে বার্তা বাজার প্রতিনিধিকে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, গত ১লা আগস্ট সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘কর্মজীবি মা-বাবার সহায়ক পরিবেশ গড়ি, মাতৃদুগ্ধ নিশ্চিত করি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২৩ এর বিশেষ প্রচারাভিযান শুরু হয়। মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উৎসাহিত করতে আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত এই ক্যাম্পেইন চলমান থাকবে।

ডা. সায়েমুল হুদা জানান, যেসব শিশুদের বেশির ভাগেরই বয়স ছয় মাসের কম, তাদেরকে শুধুই মাতৃদুগ্ধ পান করালে বছরে আট লাখের বেশি শিশুর জীবন রক্ষা পাবে। এজন্য শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর কোন বিকল্প নেই। শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে মা ও শিশু দু’জনেরই উপকার হয়। জন্মের ১ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ দিলে মায়ের গর্ভফুল তাড়াতাড়ি পড়ে, সহজে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়, ফলে মা রক্তস্বল্পতা থেকে রক্ষা পায়। পাশাপাশি, জন্মবিরতিতে সাহায্য করে, স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়।

ডা. হুদা বলেন, শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে শিশুর সর্বোচ্চ শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং কানের প্রদাহ কমায়, দাঁত ও মাড়ি গঠনে সহায়তা করা সহ অনেক উপকারিতা আছে।

অপরদিকে, মায়ের দুধ না খাওয়ালে শিশুর নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৫ গুণ বৃদ্ধি পায় বলে জানান সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, মায়ের দুধের অভাবে শিশুর ডায়রিয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১১ গুণ বৃদ্ধি পায়। শিশুদের অপুষ্টি ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৪ গুণ বৃদ্ধি পায়। জন্ডিস ও পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণসহ ডায়রিয়া হওয়ার আশংকা বৃদ্ধি পায়। শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয় এবং বয়সের তুলনায় ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পায়। তাই মাতৃদুগ্ধ বঞ্চিত শিশুরা বিভিন্ন রোগে সহজে আক্রান্ত হয় এবং কখনও অকালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে।

ডা. সায়েমুল হুদা আরও জানান, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমরা সারা বছরই মায়েদেরকে শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পান করাতে ‘কাউন্সেলিং’ করে থাকি। তবে যেহেতু আগস্ট মাসের প্রথম সাত দিন নিরাপদ মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ, এটা এক বিশেষ সপ্তাহ, এজন্য আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীরা ‘ফিল্ড’ পর্যায়ে এই সপ্তাহে ‘ডোর টু ডোর’ স্বাস্থ্য সেবা দিতে গিয়ে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে মায়েদের বিশেষভাবে সচেতন করে থাকেন।

বার্তাবাজার/এম আই