বগুড়া শেরপুরের শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাস্তা নির্মানের সরঞ্জাম রেখে মাঠের জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয় চলাকালে ওই মাঠেই আগুন জ্বালিয়ে বিটুমিন গলানো হচ্ছে। এ কারণে কালো ধোঁয়া ও ছাই দিয়ে স্বাস্থ্য ঝুকি নিয়ে ক্লাশ করছেন শিক্ষাথীরা। শুধু তাই নয় লেখা পড়ায় মনোযোগও নেই শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও মাঠ এক মাস ধরে দখলে থাকায় স্থানীয় শিশু কিশোরেরা খেলাধুলা থেকেও বঞ্চিত রয়েছে।

১৮ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে গাড়িদহ ইউনিয়নের শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শাজাহানপুর উপজেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “আলমগীর এন্টারপ্রাইজ এর নির্মান মাসগ্রী মাঠের একপাশের জায়গায় পাথর, ইটের কংক্রিট, বালু, মাটি, স্কেভেটর, বিটুমিনের ড্রাম রাখা হয়েছে। স্কুলের শহীদ মিনারের পাশে বিটুমিন গলানোর জন্য চুলা স্থাপন করে আগুন জ্বালিয়ে কাজ করছে। স্কুল চলাকালিন সময়ে স্কুলের সামনে মেশিন বসিয়ে জ্বালানি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পাথর মিক্স ও বিটুবিন গলানোর কাজ করায় সৃষ্ট ধোঁয়া বিদ্যালয়ের ভবনে প্রবেশ করছে। এতে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের। বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুকি।

স্থানীয়রা বলেন, এ মাঠ গ্রামের একমাত্র মাঠ। আমাদের সন্তানরা এখানে খেলাধুলা করে। মাঠের মধ্যে মালামাল রেখে দূর-দূরান্তের রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। তাই তারা খেলাধুলা করতে পারছে না।
স্থানীয় এক কিশোর বলে, মাঠে খালি পায়ে হাঁটা যায় না। পাথর, ইটের টুকরা পায়ে লাগে। অনেক ব্যথা পাই। আমরা এক মাস ধরে খেলতে পারছি না।

স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মো. সুমন বলেন, এক মাস ধরে বিদ্যালয়ের মাঠের এক অংশ দখল করে এখানে রাস্তার কাজের ইট, বালি, বিটুমিন, মেশিনসহ জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। স্কুল চলাকালীন সময়েও তাঁরা বিটুমিন জ্বাল দেন। অনেক কালো ধোঁয়া হয়। বাচ্চারা এখানে খেলাধুলা করতে পারে না। এখানে মালামাল রাখার যৌক্তিকতা নেই।
স্কুলের অভিভাবক কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম টুকু বলেন, আমি রাখতে নিষেধ করেছি। গতকাল বিষয়টি নিয়ে বসেছিল। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জানিয়েছেন দ্রæত এগুলো সরিয়ে নিয়ে যাবে।
শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ আলম এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে অপারকতা প্রকাশ করেন।

আলমগীর এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর বাদশা আলমগীর জানান, যথাযত সরকারি নিয়ম মেনেই রাস্তার তৈরির সরঞ্জাম রেখে কাজ করছি।
শেরপুর উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার তাহেরুল ইসলাম জানান, আমি গত ৭ তারিখে যোগদান করেছি এবং রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম রাখার বিষয়টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছি যাতে দ্রæত গেুলো অপসারণ করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে শেরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান জানান, অনুমতি ছাড়া মাঠে রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম রাখতে দেওয়ায় প্রধান শিক্ষককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঠিকাদার ও স্থানীয়রা বসে শিক্ষা অফিসার বরাবরে ২দিনের সময় চেয়ে একটি আবেদন দিয়েছেন। যদি তারা দুই দিনের মধ্যে রাস্তা তৈরির সরঞ্জাম না নিয়ে যায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা সুলতানা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, খোঁজ নিয়ে অতি দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বার্তাবাজার/রাহা