বাবা ছিলেন ভারতের কোন এক জেলার বাসিন্দা। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলে আসেন বাংলাদেশে। আট সন্তানের জনক বাবা কোন স্থায়ী ঠিকানা গড়তে পারেননি বাংলাদেশে। সেই সূত্রে সন্তানরাও থেকে গেছেন ঠিকানাহীন।

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বাসিন্দা সেই পিতার এক সন্তান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আক্তার হোসেন। ৭০ বছর বয়সী আক্তার বলেন, এ জীবনে আমার কোনো ঠিকানা নেই, অন্যের জায়গায় থেকেছি। আর এখন শেষ বয়সে এসে আমি ভাবিনি যে আমার পায়ের তলায় মাটি হবে, আমাদের পাকা ঘর হবে।

আক্তার হোসেন বলেন, আমি ছিলাম অন্যের জমিতে। এখন আমাকে পাকা ঘর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা আমাকে পাকা ঘর ও জমি দিয়ে আমার জীবনে আলো দিয়েছেন।

শুধু তাই নয় এটি আমার পরিবারের সদস্যদের জীবনও বাঁচিয়ে দিয়েছে। এখন আর আমাকে মানুষের জমিতে ঘর করে থাকতে হবে না।

রাণীশংকৈল উপজেলায় চতুর্থ পযার্য়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পে আক্তার হোসেন তার বাড়ি বুঝে পাওয়ার পর বলেন, ৭০ বছর পর নিজের একটি ঠিকানা পেলাম।

তিনি বলেন, টাকার অভাবে ছেলেদের স্কুলে দিতে পারিনি। দিন এনে দিন খেয়েছি। সেও অনেক আগের কথা। আমার পায়ের তলায় কোনো মাটি ছিল না। শুধু রাতে দুচোখের পানিতে বালিশ ভিজেছে। কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি পায়ের তলায় মাটি হবে। সেই আশা পূরণ করেছেন শেখ হাসিনা।

আক্ষেপের সাথে তিনি বলেন, সারাটাজীবন অন্যের জমিতে বাস করতে গিয়ে নানা কটুকথা শুনতে হয়েছে। অনেক খারাপ কথা বলার পরেও সহ্য করতে হয়েছে।

এখন যতই অভাবে থাকিনা কেন ঝড় বাদলের দিনে মাথার উপরে আশ্রয় হলো। আধা পাকা হওয়ায় আর বছরে বছরে ঠিক করতে হবে না। ঝড়ের দিনে চাল উড়ে যাওয়ার ভয় নাই।

বর্তমান সরকার আমাদের জমি দিলেন, বাড়ি দিলেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নামাজের সময় দোয়া করি।

উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের আরজিতগাঁও এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪৮টি ঘরের মধ্যে একটি ঘর পেয়েছে আক্তার হোসেন দম্পতি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে উপকার ভোগীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে আরেকটি বাছাই কমিটি আছে। সেই কমিটি যাচাই বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়।

উল্লেখ্য, এ উপজেলায় চতুর্থ পযার্য়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২১০টি ঘর উপকারভোগীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বার্তাবাজার/এম আই