একদিনে গাজার কেন্দ্রীয় এলাকায় নিহত হয়েছে ইসরাইলের ২১ সেনা সদস্য। ৭ই অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলের এত বেশি সেনা একসঙ্গে মারা যাওয়ার খবর শোনা যায়নি। সেই হিসেবে এটাই ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ক্ষতি। ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ডানিয়েল হাগারি বলেছেন, সোমবার গাজায় একটি ঘটনায় ২১ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে কিসুফিম সম্প্রদায়ের সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি। এ নিয়ে গাজা যুদ্ধে নিহত ইসরাইলি সেনার সংখ্যা দাঁড়ালো ২০৬। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইসরাইল।

এতে বলা হয়, ওই মুখপাত্র আরও বলেছেন, সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ৬০০ মিটার ভিতরে অভিযান চালাচ্ছিল সেনারা। সেখানে তারা গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসের অবকাঠামো এবং স্থাপনা ধ্বংস করছিল। এর মাধ্যমে সেখানে তারা একটি বাফার জোন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিল, যাতে ইসরাইলি বাসিন্দারা তাদের ঘরে ফিরতে পারেন। ডানিয়েল হাগারি বলেন, আমরা যতদূর জানতে পেরেছি স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৪টার দিকে সেনাদেরকে নিরাপত্তা দিচ্ছিল একটি ট্যাংক।

সেখানে তাদের ওপর হামলা হয়। একের পর হামলা হয়। এ সময় দুই তলাবিশিষ্ট দুটি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বিধ্বস্ত হয় ভবন দুটি। এই দুটি ভবনের ভিতরেই অবস্থান করছিল ইসরাইলি সেনারা। কিছু সেনা এর কাছাকাছি অবস্থান করছিল।
হাগারি বলেছেন, সেনারা ভবন দুটি উড়িয়ে দেয়ার জন্য মাইন পুঁতে রেখেছিল। তা বিস্ফোরিত হয়ে এমনটা ঘটতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বিধ্বস্ত ভবন দুটি থেকে হতাহতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েক ঘন্টা সময় লেগে যায়। পরে নিহত সেনা সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়। তাদের পরিবারবর্গের কাছে খবর জানানো হয়।

সোমবার এসব সেনা নিহতের ঘোষণার খবরে মঙ্গলবার সকালটা অসহনীয় হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। এক্সে তিনি লিখেছেন, নিহতরা হলো ইসরাইলের বীর, দেশপ্রেমিক, দেশের রক্ষক। তিনি আরও লিখেছেন, এসব যোদ্ধার পরিবারের কাছে আমি বিপুল পরিমাণ সহমর্মিতা জানিয়েছি। এই কঠিন সময়ে পুরো ইসরাইলি জাতি তাদের পাশে আছে।

অন্যদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, এসব মৃত্যু আমাদেরকে যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে আমাদেরকে বাধ্য করছে। মঙ্গলবার সকালকে তিনি কঠিন এবং বেদনাময় বলে বর্ণনা করেন। সামনে দশকের পর দশক ইসরাইলের ভবিষ্যত নির্ধারণ হবে এই যুদ্ধে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে ইরান, তুরস্ক ও লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। গাজা উপত্যকা, সিরিয়া এবং লোহিত সাগরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘে মিটিং হতে পারে। তার আগে ল্যাভরভ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আবদুল্লাহিয়ান গাজায় দ্রুততার সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন বলে একমত হয়েছেন। একই সঙ্গে সেখানে সাধারণ মানুষের জন্য মানবিক সহায়তার পরিবেশ সৃষ্টির কথা বলা হয়।

বার্তা বাজার/জে আই