সারাদেশে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এতে চাহিদা বেড়েছে এনএস ও ডিএনএস স্যালাইনের। কিন্তু চাহিদার তুলনায় হাসপাতাল ও ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত স্যালাইন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। কিছু কিছু ফার্মেসিতে স্যালাইন পাওয়া গেলেও তা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে রোগীদের।

এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে স্যালাইন সরবরাহ করছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. আলী আকসাদ ঝন্টু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েকমাস ধরে ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রায় সহস্রাধিক রোগীদের বিনামূল্যে এনএস ও ডিএনএস স্যালাইন সরবরাহ করেছেন তিনি। সেইসাথে ডায়রিয়া ও কলেরা রোগে আক্রান্ত কিছুসংখ্যক রোগীদেরও সিএস স্যালাইনের ব্যবস্থা করছেন। ডেঙ্গু সচেতনতা রোধে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ উপলক্ষে নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু। পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহের চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডের হটস্পটে এডিস মশা এবং মশার প্রজনন স্থানগুলোতে শনাক্ত ও নির্মূলসহ ঘরবাড়ি ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে সকলকে সচেতন করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল বুধবার রাতে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীদের খোঁজ-খবর নেন মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু। এসময় প্রতিটি ডেঙ্গু রোগীকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় স্যালাইন বিতরণ করেন তিনি।

আলফাডাঙ্গা পৌরসভার নওয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিঠুন বিশ্বাস জানান, ‘আমার শ্বশুর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়৷ কিন্তু তার এলাকা লাহুড়িয়া কালিগঞ্জ এলাকায় ডেঙ্গুর স্যালাইন না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছিলেন। পরে আমি খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়রের নিকট থেকে বিনামূল্যে স্যালাইন সংগ্রহ করি।’

গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও আলফাডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসিন্দা ডা. সুমন রায় জানান, ‘দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এতে চরম সংকট দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইনজেকশনযোগ্য স্যালাইনের। এমন পরিস্থিতিতে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের স্যালাইনের প্রয়োজন খবর পেলেই বিনামূল্যে তা সরবরাহ করছেন। সত্যি এটি একটি মহানুভবতার পরিচয়। দেশে এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে সকল জনপ্রতিনিধি এভাবে এগিয়ে আসলে আমরা যেকোন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো।’

জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. আলী আকসাদ ঝন্টু বার্তা বাজার’কে বলেন, ‘মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদগ্রস্ত হলে তার পাশে দাঁড়ানো, বিপদ মুক্তির জন্য সাহায্য করা ইসলামের শিক্ষা। আমি সেই চিন্তাচেতনা থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত কোন রোগীর যেন স্যালাইন সংকট না দেখা দেয় এজন্য আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সেকারণে আমার গাড়িতে সবসময় স্যালাইন রাখি৷ খবর পেলেই রোগীদের স্যালাইন পৌঁছিয়ে দিতে চেষ্টা করি।’ মেয়র আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার কমাতে। ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বার্তা বাজার/জে আই