রান্না করার সময় যে সব বর্জ্য যে গুলোতে হাইড্রোজেন উপাদান থাকে সেগুলো দিয়ে এনার্জি উৎপাদন করা সম্ভব। উন্নয়শীল দেশ হিসেবে আমরা যে পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করার কথা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় তা সম্ভব হয় নি। সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্টের জন্য এই বিষয়টি জরুরি।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) “বাংলাদেশে জৈব অবশিষ্টাংশের অবাত সহ-পাচন থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন”- শীর্ষক আলোচনা সভায় এসকল কথা বলেন বিইপিআরসির পরিচালক (উদ্ভাবন) ড. হাসান মাহমুদ। সোমবার (১২ জুন) সকাল নয়টায় বাকৃবির কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ওই আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জ্বালানী ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল (বিইপিআরসি) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের আয়োজনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান। সভার মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন রিহায়কেয়ারের (গ্রীন এনার্জী প্রজেক্ট) কো-প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর এবং কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. চয়ন কুমার সাহা। এসময় ‘বিইপিআরসি দ্বারা গবেষণা তহবিল সুযোগ’ বিষয়ক উপস্থাপনা প্রদান করেন বিইপিআরসির পরিচালক (উদ্ভাবন) ড. হাসান মাহমুদ।

তিনি আরো বলেন,পায়রা বিদুৎ কেন্দ্রে কয়লা জ্বালানি ব্যবহার করার ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয় যা পরিবেশের জন্য হুমকি। আবার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো ৯৩% প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয় এতে যেমন গ্যাসের অপ্রতুলতা বৃদ্ধি পায় তেমনি পরিবেশের ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে বায়োগ্যাস সমাধান হতে পারে। হাইড্রোজেন পুড়ালো কার্বন ডাইঅক্সাইড কম নির্গত হয়। তাই ফিউচার ফুয়েল হিসেবে হাইড্রোজেন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল। এছাড়াও বাংলাদেশ জ্বালানী ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের ডিরেক্টর ড. হাসান মাহমুদ, বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান ও একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলম, অধ্যাপক ড. চয়ন কুমার সাহা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফলিত রসায়ন বিভাগ এবং রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইলসহ অন্যান্য অনুষদের শিক্ষক ও ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও অধ্যাপক ড. চয়ন বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে বিশুদ্ধ এবং টেকসই শক্তিতে রূপান্তর বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিকূলতাগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং আর্থিক উন্নয়নে শক্তির একটি বড় প্রভাবক। আমাদের প্রায় ৫১ দশমিক ০৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের ঘাটতি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। এজন্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ এবং টেকসই শক্তি যার অন্যতম উৎস হলো জৈব অবশিষ্টাংশের অবাত সহ-পাচন। প্রাণি, মাঠ শস্য এবং শস্য প্রক্রিয়াকরণ থেকে যথাক্রমে প্রায় ১৭ দশমিক ৬৩, ৩৭ দশমিক ৯৯ এবং ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ জৈব অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায় যা থেকে উৎপন্ন বায়োগ্যাস হতে পারে নবায়নযোগ্য ও বিশুদ্ধ শক্তির উৎস।

বার্তা বাজার/জে আই