ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে উড়িয়ে নিয়ে যায় লুবনার ঘরটি। জোয়ারে ভেসে যায় ঘরের সকল আসবাবপত্র। পড়ে থাকে শুধুমাত্র ক্ষতবিক্ষত ভিটেমাটি। পলিথিন দিয়ে ঢেকে কোন রকমে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করলেও কালো মেঘের ঘনঘটায় ঝড়বৃষ্টিতে ভাঙা বিধ্বস্ত ঘরে এক অমানবিক বিরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করে। এমনি ভাবে গত এক মাস ধরে স্বামী-সন্তানের জন্য খোলা আকাশের নীচে ঝড়বৃষ্টিতে চুলা আগুনে বিঘ্ন সৃষ্টির মধ্যেও রান্নাবান্না করে কোনরকমে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছেন স্বামী ও ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে। এমন অমানবিকতার পরস্থিতির শিকার নিঝুমদ্বীপের লুবনা বেগমের বিধ্বস্ত ধংসস্তুপের নিচে পড়ে থাকা ঘরটি করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে আলোকবর্তিকা মানবিক ইউনিট নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংঘঠন।

সম্প্রতি বার্তা বাজারে ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিধ্বস্ত ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন লুবনা’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে আলোকবর্তিকা মানবিক ইউনিট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি এগিয়ে আসে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে লুবনার বিধ্বস্ত ঘরটি করে দেয়ার জন্য যোগাযোগ করে।

আলোকবর্তিকা মানবিক ইউনিটের চেয়ারম্যান আশেক সুলতান মুঠোফোনে জানান, আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। সমাজের অবহেলিতদের পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। এছাড়াও সামাজিক সংগঠনগুলো দুস্থ মানুষদের কল্যাণে এগিয়ে এলে সমাজ থেকে দারিদ্র্যতা দূর করা অনেকাংশে সম্ভব।

তারা জানান জনপ্রিয় অনলাইন প্রোটাল বার্তা বাজারে নিঝুমদ্বীপের লুবনা বেগমের ঘরের খবরটি দেখে আমরা ঘরটি করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি। ইতোমধ্যেঃ গৃহহীনদের মাঝে ৪টি ঘর নির্মাণ, ৩টি স্বাবলম্বী প্রজেক্ট সহ সর্বমোট ৭৫টি মানবিক প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই মানবিক কার্যক্রমের আওতায় আমরা অসহায় লুবনা বেগমের কষ্ট দূর করার উদ্দেশ্যে অতি দ্রæত ঘরটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মোঃ আজমির হোসেন জানান, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে আমরা বিভিন্ন পেশাজীবী যুবসমাজ একত্রিত হয়ে সমাজের গৃহহীন ও কর্মহীন পরিবার, বিধবা, নিঃস্ব, অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা সেবা, গরীব দুঃখী, ছিন্নমূল, অসহায় মানুষ এবং দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষ চিরদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেনা। মানুষের মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষ তাদের নিজের অর্থ সম্পদ সাথে নিয়ে যেতে পারে না। তাই অর্থের মায়ায় না পড়ে সমাজের অবহেলিত ও খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো সকলের কর্তব্য। যতটুকু সম্ভব সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমাজের অবহেলিত মানুষদের বিভিন্ন উপায়ে আমরা সহায়তা করে থাকি।