ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়ন জাফরাবাদ নতুনচর মৌজা মেঘনা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করা ও নতুন করে বালুমহাল ইজারা না দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী

শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকাল ৫ টার দিকে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের সোনাবালুয়া মেঘনা নদীর পাড় ও বালু মহালের সামনে ব্যানার নিয়ে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে নুরজাহানপুর,সোনাবালুয়া, মুক্তারামপুর,গ্রামের তিন শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

এসময় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে গ্রামবাসী বলেন, উপজেলার ধরাভাঙ্গা,মুক্তারামপুর,সোনাবালুয়া, নুরজাহানপুর, বড়িকান্দি গ্রামে প্রায় ১০০ বছর ধরে মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর হারিয়ে শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। এসব গ্রামের ভাঙ্গনরোধে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বাঁধ নির্মাণ করেন। সেখানে ইজারাদার বিআইডব্লিউটিএর হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের নিয়ম অমান্য করে ৩২ একর জায়গায়সহ বাঁধের তীর ঘেঁষে ১০০-১২০ ফুট গভীরতা থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করছেন। প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০টি খননযন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে গড়ে ১৫-২০ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছেন। অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনের ফলে সেখানে বালুশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে জাফরাবাদ মৌজার নতুনচর এলাকায় বেশ কিছু কৃষকের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায় । ভাঙ্গনরোধের বাঁধও এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া নদীতীরবর্তী বসতবাড়িসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বালুমহালের ইজারা বাতিল এবং নতুন করে বালুমহাল ইজারা না দেওয়ার দাবিতে নদীর পাড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বড়িকান্দি ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন, সমাজ সেবক নোয়াব আলী, সমাজ সেবক রবিউল্লাহ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,সহ এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষ।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ থেকে আসন্ন ৩০ চৈত্র ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং পর্যন্ত বড়িকান্দি জাফরাবাদ মৌজা নতুনচর মেঘনা নদীর বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের দেওয়া সম্ভাব্য ইজারা মূল্য নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৯ কোটি টাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ শোভনের মালিকানাধীন মুন্সি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বালুমহালটি ইজারা পায়।