বাংলাদেশের বাজারে অস্থিতিশীলতার জন্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এর থেকে উত্তরণের জন্য দেশিয় পণ্য উৎপাদন বাড়ানো এবং তার উপর নির্ভরশীলতা তৈরির প্রতি জোর দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমান বিশ্ব তো গ্লোবাল ভিলেজ, কেউ একা না। বিদেশে দাম বাড়ে, আমাদের উপর চাপ বাড়ে। এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আমাদের দেশিয় পণ্যের উৎপাদন ও তার ব্যবহার বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে।

রোববার (২১ জানুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সকাল ১০টায় ৩৫ মিনিটে তিনি পূর্বাচল মেলাস্থলে উপস্থিত হন এবং মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পেরেছি। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটের মাধ্যমে আমাদের আবার ক্ষমতা বা সেবা করার সুযোগ দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৯৬ সাল থেকে যখন সরকার গঠন করেছি সেখান থেকে একটা প্রচেষ্টা, আর্থসামাজিকভাবে বাংলাদেশকে উন্নত করা। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে, সে পদক্ষেপ নেওয়া।

শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের যদি প্রসার না ঘটে, কোনো দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছিলাম, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট একোয়া আমরা উৎক্ষেপণ করেছি। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা। আমরা প্রমাণ করেছি, বাংলাদেশের জনগণকে কেউ চ্যালেঞ্জ দিয়ে দাবায় রাখতে পারবে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইস‌লাম টিটু‌র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুব আলম।

এবারের বাণিজ্য মেলায় সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া এবং ভারতসহ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

জানা গেছে, এবারের মেলায় প্রবেশের টিকিট মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া শিশুদের টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা। এবার প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা ৩৫১টি। এছাড়াও থাকছে রেস্তোরাঁ, মসজিদ, ব্যাংক, এটিএম বুথ, শিশু পার্ক, মা ও শিশু কেন্দ্র। মেলায় সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া ও ভারতসহ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

এদিকে মেলায় যাতায়াত সুবিধার জন্য গতবারের মতো শাটল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকবে। কুড়িল বিশ্ব রোড হতে এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত বিআরটিসি বাস চলাচল করবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে, তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে।

প্রতি বছরের শুরুতে (১ জানুয়ারি) বাণিজ্যমেলা শুরু হলেও এবার নির্বাচনের কারণে পেছানো হয় এই তারিখ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলে হচ্ছে বাণিজ্যমেলা।

বার্তা বাজার/জে আই