মাগুরার শ্রীপুর থানার এসআই সাফাত ও এএসআই সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে ইয়াবা দিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে সাড়ে ৭ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার সাচিলাপুর আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ভুক্তভোগী তারিকুল ইসলাম জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় সাচিলাপুর বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে শিমুলের দোকানের সামনে থেকে ৪ থেকে ৫ জন পুলিশ আমাকে তল্লাশী করে কিছু না পেয়েও মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে চোখ বেঁধে মাঠের কিনারে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায় এবং টাকার দাবি করে। অমানুষিক নির্যাতনের একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। এসময় তারা আমাকে দিয়ে আমার বাড়িতে ফোন করিয়ে কল্যাণপুর সরকারি পুকুরের কাছে আসতে বলে। আমার ভাই এবং স্ত্রী সুদে করে ৬ হাজার টাকা নিয়ে সেখানে গেলে তারা ১০ হাজার টাকার দাবি করে। আমার স্ত্রী টাকা দিতে অপারগতা জানালে ২০ পিস ইয়াবা দিয়ে মামলা দেবে বলে ভয় দেখায়। বাধ্য হয়ে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হলে আমাকে ছেড়ে দেয় এবং বাকী টাকার জন্য আমার এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি রেখে দেয়।

পরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে পোষা হাস বিক্রি করে ১৫শ টাকা নিয়ে শ্রীপুর থানায় মোবাইল ফোন আনতে গেলে শ্রীপুর থানার এএসআই সাইদুর রহমান টাকা কম থাকার কারণে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। পরে ৫শ টাকা দেওয়ার শর্তে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেয়।

তারিকুল ইসলাম আরো জানায়, গত বছরের ১৩ জানুয়ারি সাচিলাপুর আশ্রায়ণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর পরিচালনা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করি আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ছিলেন রেহেনা খাতুন তিনি ৪ ভোটে হেরে গিয়ে আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তখন থেকে তিনি বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অপপ্রচার করেন। কয়েক মাস আগে সাচিলাপুর বাজারের পাশে খালের মধ্যে বাশ দিয়ে ঘর তুলে সেখানে চায়ের দোকান করি। ওইদিন সন্ধায় আমার চায়ের দোকানে চুলা ঠিক করছিলাম হঠাৎ করে পিছন থেকে পুলিশ এসে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে বাজারের বাইরে নিয়ে যায় এবং আমার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে কিন্তু আমি এত টাকা দিতে পারবো না বললে পুলিশ আমাকে বলে ইয়াবা দিয়ে চালান করবো।

কিন্তু এ কথা আমার গার্মেন্স কর্মী স্ত্রী জানতে পেড়ে ৪০ হাজার টাকার নিয়ে আশ্রায়ণের সভাপতি ও অন্যান্য লোকের মাধ্যামে পুলিশ সদস্যদের দিতে গেলে তারা এক লাখ টাকা দিতে হবে তা না হলে ইয়াবা দিয়ে চালান করে দিবে জানায়। পড়ে ১ লক্ষ টাকা দিতে না পারায় আমাকে মাদক মামলায় ফাসিয়ে ৫০ পিচ ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মাদক মামলা দেয় এবং কোর্টে চালান করে। আমি বিনা দোষে প্রায় দুই মাস জেল খেটে কিছু দিন আগে জামিনে বাড়িতে এসেছি আবারো একই ভাবে আমাকে অকারণে দোষী হয়ে পুলিশি হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে। আমি এই মিথ্যা মামলা আর পুলিশি হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।পরিবার নিয়ে ভালোভাবে জীবন যাপন করতে চাই।

এবিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই সাইদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এমন কিছু হয়নি। কাল আসেন সাক্ষাতে কথা হবে।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায়ের কাছে ঘটনার বিষয়ে তিনি জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছিলো বলে জানি। এছাড়া আমার কিছু জানা নেই তবে বিষয়টি আমি দেখছি।

ঘটনার বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সর্কেল) দেবাশীষ কর্মকারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, থানা থেকে আসামি যেগুলো ধরে বা ছেড়ে দেয় বা কোন অভিযানে বের হলে আমাদের নলেজে থাকে। আমি এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করছি।

বার্তাবাজার/এম আই