প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে বদলে যাচ্ছে মানুষের চিন্তার রূপরেখা। এমন সময়ে লেখকরা কি পারছেন পাঠকদের উপযোগী সাহিত্য রচনা করতে? কিংবা পাঠকরা কি পারছেন লেখকদের চিন্তার গভীরে ঢুকতে? গল্প বিষয়ক পত্রিকা ‘পারাপার’ এর আয়োজনে এমনই প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বগুড়ার শেরপুরে অনুষ্ঠিত হলো “লেখক-পাঠক আড্ডা”।

পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডে রাডার সাইন্স একাডেমি এ্যান্ড স্কুলের হলরুমে উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডা. রাফসানা জাহান রিম্মী। অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা ও উপস্থাপন করেন, পারাপারের সম্পাদক কথা সাহিত্যিক নাহিদ হাসান রবিন।

প্রায় ৪ ঘন্টাব্যাপী এই আড্ডায় আলোচনা করেন, বাংলাদেশ-ভারতের বিখ্যাত আবৃত্তি শিল্পী ও বগুড়া হাজী জয়নাল আবেদীন কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ সুলতানা পারভীন শ্রাবণী, কবি ও কথাসাহিত্যিক সাহাব উদ্দিন হিজল, লতিফ আদনান, ডা. মনিরুজ্জামান স্বপন, সামিট স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম লিপু, প্রোগ্রেসিভ স্কুল এ্যান্ড কলেজের পরিচালক শামসুজ্জামান শাহীন, রাডার সাইন্স একাডেমি এ্যান্ড স্কুলের পরিচালক হাসানুর রহমান হাসান, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরী স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবু তালহা মোঃ এরশাদুজ্জামান, দৈনিক মানবকণ্ঠের শেরপুর প্রতিনিধি রাশেদুল হক, দৈনিক আজকের পত্রিকার শেরপুর প্রতিনিধি রঞ্জন কুমার দে, ছোনকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুন নাঈম, পানিসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কুলছুম শেলী, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরী স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুস আল সামি ও প্রোগ্রেসিভ স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিয়া মাখদুমা আনু।

আলোচকরা বলেন, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষের পাঠ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। যেকোন তথ্য এখন সহজেই ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। আবার বিনোদনের জন্য সব বয়সের মানুষ ইন্টানেটের দিকে ঝুকছে। আবার পাঠকদের আকৃষ্ট করার মতো কালজয়ী কোন সাহিত্যও সৃষ্টি হচ্ছে না। তাই ছাপনো বইয়ের প্রতি আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে পাঠকদের এই যুক্তি নাকচ করেছেন লেখকরা। তারা বলেন, চারিদিকে চটুল বিনোদনে আকৃষ্ট হওয়ায় পাঠকদের মাথা খাটিয়ে সাহিত্যরস উপলব্ধি করার সক্ষমতা কমে গেছে।

এর জন্য তারা মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা ও অবারিত নির্বিচারে ব্যবহার করার প্রবনতাকেই দায়ি করেছেন। তাদের এই যুক্তির সাথে একমত পোষণ করেছেন শিক্ষকরা। তারা বলেন, বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় অতিক্রম করে আমাদের শিশু কিশোর ও তরুণেরা মোবাইল মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে তারা লেখাপড়াতেও মনযোগী হচ্ছে না। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে আলোচকগণ বয়সভিত্তিক মোবাইল ফোন ব্যবহার ও কনটেন্টের উপলভ্যতা নিয়ন্ত্রণে সরকারি নীতিমালা তৈরি ও কঠোর প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

এছাড়াও তারা নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করতে এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভিন্নমুখী পদক্ষেপ কামনা করেন।

বার্তা বাজার/জে আই