মাদারীপুরের শিবচরে সাবেক স্বামীর এসিড নিক্ষেপে ঝলসে যাওয়া স্ত্রীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ দিন পর মৃত্যু হয়েছে। গত ১৬ আগষ্ট এক সন্তানের জননী গৃহবধূ সাদিয়ার মাথায় এসিড নিক্ষেপ করে সাবেক স্বামী সুমন শিকদার ও তার সহযোগিরা। ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে দীর্ঘ ২৫ দিন যাবত চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে জেলার শিবচর উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের সিরাজ শিকদারের ছেলে স্পীডবোট চালক সুমন শিকদারের(২৬) সাথে একই ইউনিয়নের লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের(২০) প্রনয় থেকে বিয়ে হয়। বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে তারা। তাদের ঘরে এক শিশু কন্যা সন্তানও রয়েছে। সংসার জীবনের শুরু থেকেই সুমন মাদকসেবী হওয়ার কারনে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। সম্প্রতি এ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারন করলে তাদের তালাক হয়ে যায়।
কিন্তু তালাক হওয়ার পরও মাদকাসক্ত সুমন দফায় দফায় সাদিয়ার বাবার বাড়িতে হামলা চালাতো। এ নিয়ে সাদিয়া শিবচর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সুমনের বাড়িতে গিয়ে তাকে শাসিয়ে আসে। কিন্তু থামেনি সে। আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। কয়েকদিনের মধ্যেই সাদিয়ার অন্যত্র বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে সুমন খুব ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গত ১৬ আগষ্ট বুধবার রাত ১০ টার দিক সুমন কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সাদিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার মাথায় এক বোতল এসিড ঢেলে দেয়।
এসিডের আঘাতে সাদিয়ার মাথা, মূখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে পুড়ে যায় । পরবর্তীতে স্বজনরা সাদিয়াকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরন করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সাদিয়ার মৃত্যু হয়। সাদিয়ার লাশ রাতে তার বাড়িতে পৌছলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এদিকে সাদিয়াকে এসিড নিক্ষেপের পরদিন তার বোন তাছলিমা বাদী হয়ে শিবচর থানায় সুমনসহ ৫ জনের নামে এসিড দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ২৪ আগষ্ট রাতে অভিযুক্ত সুমন শিকদারকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার মাঝিরচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
শিবচর থানার ওসি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, সাবেক স্বামীর এসিড নিক্ষেপে আহত গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তার লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে।
বার্তা বাজার/জে আই