নীলফামারীর ডিমলা রুপালী ব্যাংক শাখা থেকে গ্রাহককে পাঁচশত টাকার একটি জাল নোটসহ অচল টাকার নোট সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মেডিকেল মোড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও ওষুধ ব্যাবসায়ী মো. আলাল উদ্দিন রুপালী ব্যাংকের ডিমলা শাখা থেকে গত ৪সেপ্টেম্বর সকালে ব্রাক ব্যাংকের ৪৩৪১০২০০০০৮০৩ নম্বর হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে ২লাখ ২০হাজার টাকা উত্তোলন করেন। টাকা গুলো তিনি ওই অবস্থায় পাশেই পূবালী ব্যাংক ডিমলা শাখায় নিজের ৪৩৮৮৯০১০১২০৩৯ নম্বর হিসাবে দুই লাখ টাকার ওই বান্ডিলগুলো জমা দেন। পূবালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকাগুলো যাচাই বাছাই করার সময় পাঁচশ টাকার একটি জাল নোটসহ দুটি অচল নোট দেখতে পান। তারা আলাল উদ্দিনকে টাকা ফেরৎ দিলে তিনি পুরো বান্ডিলটি নিয়ে রুপালি ব্যাংকে আসেন। তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে জাল ও অচল টাকা সরবরাহের অভিযোগ করেন। এ সময় ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সাফিকুল ইসলাম নোটগুলো ফেরত নিয়ে বিনিময়ে নতুন তিনটি পাঁচশ টাকার নোট তাকে দেওয়া হয়।

পরে বিষয়টি জানতে পেরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. আবুল কালাম আজাদ জাল টাকার নোটটি ওই গ্রাহককে আবারো ফেরত দিয়ে শুধু অচল টাকার নোট দুটির বিনিময়ে নতুন দুটি পাঁচশ টাকার নোট তাকে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী আলাল উদ্দিন জানান, আমি ব্রাক এনজিওর ডিমলা শাখা থেকে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেই। চেকের মাধ্যমে সেই টাকা রুপালি ব্যাংক ডিমলা শাখা থেকে উত্তোলন করি। টাকার বান্ডিলের মধ্যে জাল ও অচল টাকা আমাকে দেওয়া হয়। আমি ওই অবস্থায় টাকাগুলো পূবালী ব্যাংকে জমা দিলে জাল নোটগুলো ধরা পড়ে। আমি তৎক্ষনাত রুপালী ব্যাংকে যাই। কিন্তু শাখা ব্যাবস্থাপক অচল নোট দুটি পরিবর্তন করে দিলেও জাল টাকার নোটটি আমাকে ফেরৎ দেন। ব্যাংক কর্মকর্তাদের বলি, ব্যাংক হচ্ছে মানুষের আশা নির্ভরতার জায়গা। জাল টাকা গ্রাহককে দেয়া বেমানান। বিষয়টি বাইরে জানাজানি করলে বা কোথাও অভিযোগ দিলে ব্যাংক ম্যানেজার আমাকে মামলার হুমকি প্রদান করে মানহানিকর কথা বলে। ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজ দেখে এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি। যাতে ভবিষ্যতে কোন গ্রাহককে এরকম হয়রানির মুখোমুখি হতে না হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, তারা বিভিন্ন সময়ে রূপালী ব্যাংকের ডিমলা শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করে প্রতারিত হয়েছেন। তাদেরকে ব্যাংক থেকে পাঁচশো ও হাজার টাকার জাল নোট সরবরাহ করা হয়েছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যাংক ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই গ্রাহককে ছেড়া টাকার দুটি নোট পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। জাল টাকার নোট তাদের নয়। তিনি বলেন, ব্যাংকের ভিতরেই গ্রাহককে টাকা গুনে ও দেখে নিতে হবে। ব্যাংকের বাইরে গেলে এর দায়ভার ব্যাংকের নয়।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে কথাওষ বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বাইরে গিয়ে আবার ব্যাংকে এসেছেন। ব্যাংকের ভেতরে জাল নোট বা অচল নোট পাওয়া গেলে তাৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতো।

নির্বাহী অফিসার আরো জানান, আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বার্তাবাজার/এম আই