নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় নিজের খেয়াল খুশি মতো স্কুলে আসার অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিনি চলতি শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছেন হাতে গোনা কয়েকদিন।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গয়াবাড়ী নবজাগরণ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোক্তার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এসব কর্মকাণ্ড করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দাবি, এ বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি।

অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না ওই শিক্ষক। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে নিজের খেয়াল খুশি মতো স্কুলে আসেন। স্কুলে আসলেও ঠিকমত কোনো ক্লাস করান না তিনি।

চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়া নুসরাত জাহান মুক্তা বলেন, স্যার আমাদের একদিন ক্লাস নিয়েছে আর কোনদিন ক্লাস নেয়নি। আমাদের অন্য স্যার মেডামরা ক্লাস নেন কিন্তু উনি নেন না। কেন নেন না তা জানি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ক্লাস ফোরে মাত্র একদিন বাংলা ক্লাস নিয়েছেন তিনি। বাকি দিনগুলো স্কুলে আসলে আমাদের ক্লাস করাতে আসেনি। তিনি স্কুলে আসেন-চলে যান আবার আসেন। কোন কোন দিন আসে না।

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মোছা. সুবাহ বলেন, মোক্তার স্যার আমাদের স্কুলে ঠিকমতো আসে না এবং আমাদের ক্লাস নেয় না। রুটিনে আছে স্যার আমাদের ইসলাম ক্লাস নেবেন তবুও তিনি আমাদের ইসলাম ক্লাস নেয় না। আমরা তাকে অনেক জোড় করেছি ক্লাস নেওয়ার জন্য। স্যার ক্লাস নিতে বললেও তিনি ক্লাস নেয় না।

নবী ইসলাম নামে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, রুটিনে স্যারের ক্লাস থাকলেও আমাদের ক্লাসে আসে না। কিন্তু স্যার স্কুলে আসে।

বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, নিয়মিতভাবে মোক্তার মাষ্টার স্কুলে আসেন না। আমি এর প্রতিকার চাই। তিনি যেন পুরোপুরি ভাবে ক্লাস করতে পারে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোক্তার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমার স্কুলের আপনাকে পাঠিয়েছে কে? এটা বলেন তো আগে। আমাকে দেখার জন্য স্টাফ আছে, আমার কর্তৃপক্ষ আছে। আপনি আগামী রোববার স্কুলে আসেন কথা হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে একাধিকবার জানিয়ে কোনো সমাধান পায়নি। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে তিনি গাফিলতি করেছেন। পরে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অভিহিত করেছি।

ওই এলাকায় দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফিরোজুল আলম বলেন, দায়িত্বে অবহেলার কোন সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, দায়িত্ব অবহেলার কোন সুযোগ নাই। যদি আমার কাছে এ ধরনের কোন অভিযোগ আসে একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে তার যে শাস্তি সে পাবে। এটা আমি নিশ্চিত করবো।

বার্তাবাজার/এম আই