ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালে অপকর্ম করেও এক কর্মস্হলে ১৫ বছর ধরে চাকুরী করছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সোহেল রানা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ডিউটি ফাঁকিসহ টাকা নেওয়া থেকে শুরু করে নানা অপকর্মের অভিযোগ।

এসব অভিযোগের প্রমাণ মিললেও কেবল শোকজেই ঢাকা পড়েছে তার সকল অপকর্ম। নিচ্ছে না কোন ব্যবস্হা এ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা। এত অপকর্ম করেও কিভাবে টিকে আছে উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার সোহেল, তার খুঁটির জোর কোথায় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।

জানা যায়, সোহেল রানা ০৬.০৪.২০০৮ ইং তরিখে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করে কর্মরত আছেন। প্রায় ১৫বছর ধরে তিনি একই কর্মস্থলে চাকুরী করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় হাসপাতালের ডিউটি ফাঁকিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও তিনি থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরেও তিনি টাকার বিনিময়ে রোগী দেখেন। এমনকি হাসপাতালের ডিউটি ফাঁকি দিয়ে তিনি এসব কর্মকান্ড নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছেন। তেমনি একটি ঘটনার প্রমাণ মেলে ২৭মে । ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সোহেল রানার ডিউটি ছিল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে। কিন্তু তিনি ২টায় হাসপাতালের ডিউটি রেজিষ্ট্রারে স্বাক্ষর করেই চলে যান পৌরসদরের ব্রীজ সংলগ্ন ফয়সাল মেডিসিন কর্ণারের নিজস্ব চেম্বারে।

এ সময় সরেজমিন গিয়ে তাকে চেম্বারে জিসান (৪ মাস) নামে এক শিশু রোগীর প্রেসক্রিপশন করতে দেখা যায়। প্রেসক্রিপশনে তার নামের আগে ডাঃ মোঃ সোহেল রানা এমনকি তিনি মেডিসিন, চর্ম, যৌন, মা ও শিশু এবং মানসিক রোগের বিশেষ অভিজ্ঞ বলে উল্লেখ রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি এভাবে রোগী দেখে আসছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ২৯.০৫. ২০২৩ইং তারিখে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লোপা চৌধুরী ওই ঘটনার যথাযত কারণ জানতে চেয়ে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সোহেল রানাকে শোকজ করেন। সোহেল রানা ৩১.০৫. ২০২৩ইং তারিখে এর জবাব দেন।

এ বিষয়ে সোহেল রানার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের সততা পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন ডাঃ লোপা চৌধুরী । এবং তিনি ০১.০৬.২০২৩ইং তারিখে সোহেল রানার শোকজের জাবাব সহ একটি প্রতিবেদন ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসে পাঠিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লোপা চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে চলমান ডিউটি রেখে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠায় এবং এ বিষয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তাকে শোকজ করা হয়েছিল তিনি শোকজের জবাবও দিয়েছেন জবাবের পর তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লোপা চৌধুরীর কাছে সোহেল রানা তার শোকজের জবাব দিয়েছে। প্রতিবেদনটি পেয়েছি অফিসের বাইরে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।

বার্তাবাজার/রাহা