পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে সিরাজগঞ্জের তিনটি ইউনিয়নের মাদ্রাসা, এতিমখানার (লিল্লাহ বোর্ডিং) শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য বরাদ্দকৃত জিআর চাল গায়েব করে ফেলেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি, বাগবাটি ও ছোনগাছা ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৬০ টন চালের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতি টনের বিপরীতে ৪৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ২৫ হাজার করে টাকা পেয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

বুধবার (৫ জুলাই) সকালে সদর উপজেলা পরিষদ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এতিমদের খাবারের জন্য বিভিন্ন ইউনিয়নে জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে রতনকান্দি ইউনিয়নে ২৫টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ৩১ মেট্রিক টন, বাগবাটিতে ১০টি প্রতিষ্ঠানে ১৪ ও ছোনগাছা ইউনিয়নে ১০টি প্রতিষ্ঠানে ১৫ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

গত ২৮শে মে সদর উপজেলা পরিষদ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে গত ৬০ টন চালের ডিও গ্রহণ করেন রতনকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম জুড়ান। জিআর চাল উত্তোলনের পর সিরাজগঞ্জ শহরের বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী আফসার আলীর কাছে বিক্রি করা হয়। সরকারি ১ মেট্রিক টন চালের বাজারমূল্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও, তিনটি ইউনিয়নের ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকল্প সভাপতির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে বলে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জানান।

মাদ্রাসা, এতিমখানার (লিল্লাহ বোর্ডিং) শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ বাকি টাকা রতনকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম জুড়ানের নেতৃত্বে বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ও ছোনগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে বাগবাটি পশ্চিম ফুলকোচা কবরস্থান দারুল হুদা ইসলামি কওমি মাদ্রাসার সুপার মৌলানা মো.আসাদুল্লাহ বলেন, আমাকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে। কত টাকা বরাদ্দ এসেছে তা আমার জানা নেই।

সাহানগাছা তালিমুস সুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিম খানার সুপার মুফতি আল-আমিন সিরাজী বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ১ টন চাল বরাদ্দ হয়েছিল। দত্তবাড়ী মাদ্রাসায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের টাকা দেওয়া হয়। আমি ১ টনের বিপরীতে ২৫ হাজার টাকা পেয়েছি। যাদের ১ টন তারা সবাই ২৫ হাজার এবং যাদের ২ টন তারা ৫০ হাজার করে টাকা পেয়েছে।

বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, ১ টন ও ২ টনের অনুকূলে প্রতি মাদ্রাসায় ২৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাকি টাকা আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

রতনকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম জুড়ান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।

অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে। বেঁচে যাওয়া টাকা ওইসব প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার জন্য আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, আমি গত তিনদিন আগে এখানে যোগদান করেছি। এই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আপনাকে জানাতে পারবো।